করোনার কবলে পরে দারিদ্র্যের মুখোমুখি হবেন ১০ কোটি মানুষ! দাবি বিশ্ব ব্যাংকের
নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংক-এর সভাপতি ডেভিড মালপাস সামনে আনলেন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানালেন করোনা প্যানডেমিকের থাবায় সারা বিশ্বের প্রায় ১০ কোটি মানুষকে গ্রাস করেছে চূড়ান্ত দারিদ্র্য।
প্রসঙ্গত, এর আগে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক অনুমান করেছিলে করোনা অতিমারীর জন্যে সারা বিশ্বের ৬ কোটি মানুষের দারিদ্র্যের চরম সীমায় পৌঁছে যাবেন।
কিন্তু নতুন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই সংখ্যা বেড়ে ৭ থেকে ১০ কোটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এখানেই শেষ নয়। ডেভিড মালপাস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি করোনা সংক্রমণের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা না যায়, তাহলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
একটি সাক্ষাত্কারে মালপাস জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি একটা বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বের করে তুলেছে। যেসব গরিব দেশ প্রবল ঝুঁকির মুখোমুখি, তাদের ওপর ঋণের বোঝা কমানো। যে সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ তাদের ঋণ দিয়েছে, তারা নিজেদের দায়িত্বের বাধা টপকেই এই কাজ করছে।
ইতিমধ্যেই Group of 20-র উন্নত অর্থনীতির দেশগুলি জানিয়েছে গরিব দেশগুলির থেকে তারা বছর শেষে ঋণ আদায় করবে না এবং বাড়তি সাহায্যের জন্যে আগামী বছর পর্যন্ত বাড়ানো হবে মোরেটোরিয়াম সাপোর্ট।।
তবে, এত রকম পদক্ষেপের পরেও যে অবস্থার বিশেষ উন্নতি হবে না, সে বিষয়েও সাবধান করে দিয়েছেন মালপাস। তাঁর মতে যে সব গরিব দেশ তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টায় প্রাণপাত করছে, তারা ঋণ ফেরতের ক্ষেত্রে এর চেয়ে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পারবে না।
বিশ্ব ব্যাংক-এর তরফে জানানো হয়েছে ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে ১০০টি দেশকে মোট ১৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থসাহায্য করবে। এতকিছুর পরেও খুব একটা রাশ টানা যাবে না চরম দারিদ্র্যে। অর্থাত্ দিনপ্রতি ১.৯০ মার্কিন ডলার বা তার চেয়েও কম আয় ক্রমশ বাড়বে সারা দুনিয়ায়।
মালপাসের মতে প্যানডেমিকের কারণে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছেন তার সঙ্গে যোগ হয়েছে খাবারের সাপ্লাইয়ের সমস্যা। সব মিলিয়ে দ্রুত অবনতি হচ্ছে মানুষের জীবনযাপনে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ কারমেন রেনহার্ট এই অর্থনৈতিক সংকটকে প্যানডেমিক ডিপ্রেশন বলে চিহ্নিত করেছেন।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে, সারা বিশ্বে আরও প্রায় ৪০ কোটি লোক চরম দারিদ্রের শিকার হতে চলেছেন। তার মধ্যে রয়েছেন ভারতের ৬ কোটি মানুষ, যাঁদের আয় হবে দিনে ১৪৪ টাকা বা তারও কম।