ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা সুভাষচন্দ্র বসু। প্রবাসী বাঙালি প্রখ্যাত আইনজীবী জানকিনাথ বসু ও প্রভাবতী দেবীর চোদ্দো সন্তানের মধ্যে নবম সন্তান নেতাজী। তাঁর জীবনের এক একটি মূহুর্ত আজও দেশবাসীর কাছে রহস্যের বেড়াজাল। আজ সেই নেতাজীর সম্মন্ধে আমরা জানব কিছু অজানা তথ্য —
১. উড়িষ্যার কটক শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্টুয়ার্ট স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত নেতাজী পড়াশুনা করেন। পরে তাঁকে ভর্তি করা হয় রাভেনস কলেজিয়েট স্কুলে। পড়াশুনায় অত্যন্ত মেধাবী সুভাষ ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানে তাঁর জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরে তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সাম্মানিক সহ বিএ পাশ করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজউইলিয়াম হলে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষাই উত্তীর্ন হন। কিন্তু দেশের প্রতি ভালোবাসার টানে এবং বিপ্লব সচেতন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নিয়োগপত্র পেয়েই তিনি ইস্তফা দেন। অত্যন্ত লোভনীয় পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় অবাক হন সবাই। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “কোনও সরকারের সমাপ্তি ঘোষণা করার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হল তা থেকে নিজেকেপ্রত্যাহার করে নেওয়া”। সেখান থেকে দেশে ফিরে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন।
২. ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইউরোপে নির্বাসিত হন। সেখানেই তাঁর প্রথম প্রেম এমলি শেঙ্কলের সাথে পরিচিত হন । ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
৩. দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি যুব কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পরে পরপর দুবার জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতিও নির্বাচিত হন। কিন্তু “স্বাধীনতা কেউ দেয়না তা ছিনিয়ে নিতে হয়” । এই ভাবধারার জন্য গান্ধীজির অহিংসা আন্দোলের সমর্থন না করার তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেন।
৪. ২০ বছরে নেতাজী ১১ বার গ্রেফতার হন। তাঁকে ভারত ও রেঙ্গুনের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল।
৫. গোটা দেশ আজ যখন নেতাজী সুভাষের উক্তি-বাণী বা পদক্ষেপ গুলি অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করছে, সেই নেতাজীর একমাত্র অনুপ্রেরণার একমাত্র উৎস ছিল ভগবৎ গীতা।
৬. ১৯২৪ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু কলকাতা পুরসভার সিইও নির্বাচিত হন। কলকাতা পুরসভার সিইও থাকার সময় একদিন গামবুট পরে অফিসে আসেন তিনি৷ বৃষ্টি শুরু হতেই চলে যান ঠনঠনিয়ায়৷ সামান্য় বৃষ্টিতেই কেন ঠনঠনিয়ায় জল জমে, তা জানতেই সেদিন অভিযানে নামেন সুভাষচন্দ্র বসু৷ পার্ক স্ট্রিটে এক নিরীহ ঝাড়ুদারকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে ব্রিটিশ পুলিশের বিরুদ্ধে৷ প্রতিবাদে মুখর হন পুরসভার সিইও সুভাষচন্দ্র৷ টেগার্ট সাহেবকে লেখা চিঠিতে গর্জে উঠেছিল সুভাষের কলম৷ ফলও ভুগতে হয়েছিল৷ ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেফতার করে সুভাষচন্দ্র বসুকে৷