আর মেক্সিকো নয়, এবার খাস বাংলায় চাষ দুর্লভ ড্রাগন ফলের
তেহট্ট: মেক্সিকোর ফলের চাষ হচ্ছে এবার নদীয়াতে। ড্রাগন নামের দুর্লভ মূল্যবান এই ফলের চাষ দেশের হাতেগোনা কয়েকটি এলাকায় অল্পবিস্তর হয়। কিন্তু এবার নদীয়ায় ড্রাগন ফল চাষ করে নজির গড়লেন তেহট্টের যুবক সুলতান মল্লিক।
ক্যাকটাস জাতীয় এই ফল সুমেরু এলাকায় প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়। বিশ্ব জুড়ে এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম পিটায়া। পরবর্তীকালে মেক্সিকো এবং থাইল্যান্ডে এর চাষ শুরু হয়। কিছুদিন হল বাংলাদেশের মাটিতেও এই ফলের চাষ কিছু এলাকায় শুরু হয়েছে।
ড্রাগন ফল চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক মূল্যবান সম্পদ। মিষ্টি স্বাদের এই ফল রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি রক্তচাপও সঠিক রাখে।
বাত নিরাময়, হার্টের সমস্ত ধরনের রোগ প্রতিরোধ, কোলেস্টেরল নির্মূল করা ছাড়াও অ্যান্টি ফাংগাল, অ্যান্টি বায়োটিক এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে ড্রাগনের চাহিদা বিশ্ব জুড়ে ছিলই। এবার প্রোস্টেট ক্যানসারেও চিকিৎসকরা ওষুধ হিসেবে ড্রাগন ফলের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
আজ থেকে প্রায় আড়াই বছর আগে ১০ কাঠা জমিতে ২৫০ ড্রাগন ফল গাছের চারা লাগান সুলতান মল্লিক। এক বছরের মধ্যেই সেগুলি ফল দিতে শুরু করে। এর মধ্যেই তিনি তিন থেকে সাড়ে তিন কুইন্টাল ফল তুলেছেন বলেও জানান।
তিনি বলেন, এই ফল স্বাস্থের পক্ষে খুব উপকারী এবং বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতেও কাজে লাগে এবং এই ফল চাষ খুব লাভজনক এর বাজার মুল্য প্রায় ২৫০-৩০০ টাকা। বাজারে এই ফলের চাহিদা ব্যাপক এবং এই চারা একবার লাগালে ৩০-৩৫ বছর ফল দেবে। সুলতান আরও জানান, খুব স্বল্প খরচে এই চাষ করা যায় যে কোনও আবহাওয়ায়, বিশেষ কিছু ফারাক লাগে না।
লতানো ক্যাকটাসের মতন ড্রাগনের গাছে ফল আসে মে মাসে এবং নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফলন হয়। পর্যাপ্ত রোদ, জল, জৈব সার এবং নিয়মিত পরিচর্যায় আসে বাহারী ফুল, তারপর সেই ফুল থেকে ধরে লোভনীয় রঙের ড্রাগন ফল।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই ড্রাগন গাছ গুলি ৩০–৩৬ বছর পর্যন্ত ফল দেবে। তিনি বলেন, বাজারে এই ফলের এত চাহিদা রয়েছে দেখে তিনি পরবর্তীতে আরও চাষ করবেন। বর্তমান প্রজন্মের কর্মহীন ছেলেদের চাষে আগ্রহ ফেরানোর জন্য তিনি জানান, বিচক্ষণতার সাথে একমাত্র জমিতে বিনিয়োগই লাভ করার নিশ্চিত পথ দেখাতে পারে।
ইতিমধ্যেই টক্সিন প্রতিরোধক হিসেবে ড্রাগন ফলের বিরাট অবদান রয়েছে। এবার তার সূত্র ধরে ড্রাগন ফলে পাওয়া বিভিন্ন যৌগকে কাজে লাগিয়ে ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে বিদেশে ইতিমধ্যে চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
ত্বকের এবং চোখের জটিল রোগে ড্রাগন ফলকেই বহু দেশ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে। পাইটোঅ্যালবুমিন নামে এক ধরনের যৌগ এই ফলে আছে, যা মানবদেহের নানা রোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া নানা ধরনের খনিজ পদার্থ, যেমন ম্যাঙ্গানিজ এবং হরেক ভিটামিন আছে ফলটিতে।