ব্রেন ডেথ আড়াই বছরের শিশুর অঙ্গ নতুন জীবন দান করল অন্য আরও পাঁচজনকে
সুরাত: ভয়ানক এক দুর্ঘটনা জীবন কেড়ে নেয় সুরাতের বছর আড়াই-এর এক শিশুর। কয়েকদিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর, চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। চিকিৎসকরা বাবা-মাকে জানিয়ে দেন, তাঁদের আদরের সন্তানের ব্রেন ডেথ হয়েছে।
এরপরই সেই কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলেন শিশুটির বাবা এবং মা। নাই বা থাকল থাকল তাঁদের সন্তান, তার অঙ্গগুলো অন্তত সচল থাকুক অন্য কারও দেহে। তাহলে বেঁচে থাকবে তাঁদের সন্তান, অন্য রূপে।
ঘটনাটি ঘটেছে সুরাতের ভাতার এলাকায়। গত ৯ ডিসেম্বর, খেলতে খেলতে আচমকাই প্রতিবেশির ফ্ল্যাটের দোতলা থেকে নিচে পড়ে যায় যশ সঞ্জীব ওজা নামের আড়াই বছরের ওই শিশু। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় আম্রুতা হাসপাতালে। সেখানেই শুরু হয় তার চিকিৎসা। কিন্তু চিকিৎসকদের সবরকম চেষ্টার পরেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। গত ১৪ ডিসেম্বর, তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়, চিকিৎসকদের তরফে।
এরপর সুরাতেরই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি নীলেশ মান্ডেওয়ালা যোগাযোগ করেন যশের বাবা-মায়ের সঙ্গে। অঙ্গদানে তাঁদের রাজি করান তিনি। যশের বাবা পেশায় একজন সাংবাদিক, তিনি বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে অমত করেননি। শুরু হয় অঙ্গদানের প্রক্রিয়া। যশের হৃদপিণ্ড আর ফুসফুস এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে চলে যায় চেন্নাইয়ে।
১,৬১৫ কিলোমিটার অতিক্রম করতে সময় লাগে ১৬০ মিনিট। সেখানেই যশের হার্ট প্রতিস্থাপন করা হয় ৪ বছরের এক রাশিয়ান শিশুর শরীরে। আর ফুসফুসটি পায় ইউক্রেনের এক বছর চারেকের শিশু। গত বছর থেকে এই দুই শিশুর চিকিৎসা চলছিল চেন্নাইয়ের হাসপাতালে। যশের অঙ্গে অবশেষে নতুন জীবন ফিরে পেল তারা।
অন্যদিকে, যশের একটি কিডনি দেওয়া হয় সুরেন্দ্র নগরের ১৩ বছরের এক কিশোরীকে এবং আর একটি পায় সুরাতেরই বছর ১৭ এক কিশোরী। যশের লিভার বা যকৃৎ দেওযা হয় একটি ২ বছরের শিশুকে এবং তার কর্নিয়া রাখা হয়েছে সুরাতের লোক দৃষ্টি চক্ষু ব্যাঙ্কে।
যশ না থাকলেও, তার এতোগুলি অঙ্গে নতুন করে বাঁচার সুযোগ ফিরে পেল এতোগুলি প্রাণ। আবার তারা সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে, যশের অঙ্গ নিজেদের শরীরে নিয়ে।