বহুতল ভেঙে মৃত ১৩, নিখোঁজ আরও কয়েকজন
মহারাষ্ট্র: সোমবার মহারাষ্ট্রের রায়গঢ়ে একটি বহুতল ভেঙে যায়। দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১৩ ছাড়িয়ে গেল। মঙ্গলবার সকালে ধ্বংসস্তূপ থেকে ১ জনের মৃত্যুদেহ উদ্ধার হয়েছিল এবং সারাদিন ধরে উদ্ধার কাজ চালিয়ে আরও ১২টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এখন পর্যন্ত অনেকের খোঁজ পাওয়া যায়নি, তাই এখনও উদ্ধার কাজ চলছে।
জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যেবেলায় মহারাষ্ট্রের রায়গঢ় জেলায় একটি ৫ তলা আবাসন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। উদ্ধারকারীরা জানান, শেষ দু’ঘণ্টায় ৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন ৬০ জনকে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ)-এর ৩টি টিম উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। ঘটনাস্থলে আছে দমকলের ১২টি টিম।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ৭ বছরের পুরনো ওই আবাসনটিতে ৪৫টি ফ্ল্যাট ছিল। দিনভর ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের মধ্যে উদ্ধারকারীদের মুখে হাসি ফোটায় ৪ বছরের এক শিশু। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরে আনন্দ চেপে রাখতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। ভিডিওতে সেই আনন্দের মুহূর্ত ধরা পড়েছে।
ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি। এদিন সকালে এনডিআরএফ একটি ভিডিও ট্যুইট করে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, উদ্ধার কাজে এনডিআরএফ টিমকে করছে স্নিফার ডগ-রা। আর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দুর্ঘটনাস্থল ধুলোয় ঢেকে রয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যের ২ মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে ও একনাথ শিন্ডে। একনাথ শিন্ডে সোমবার রাত থেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি জানান, ওই বহুতলের কনট্রাক্টর ইউনুস শেখ ছাড়াও বাড়িটির আর্কিটেক্টের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। শিন্ডে আরও বলেন, বাড়ি ভেঙে বিপর্যয়ের ঘটনায় কনট্রাক্টর দায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। তিনি কড়া সুরে বলেন, এই ঘটনায় কোনও সরকারি আধিকারিক জড়িত থাকলে তাঁকেও রেয়াত করা হবে না। নাম সামনে এলে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে। মহারাষ্ট্রের এই মন্ত্রী জানান, উদ্ধারকাজ শেষ হলেই তদন্তের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার দুপুরে কালেক্টর নিধি চৌধুরি জানিয়েছেন, ডেভেলপার ও আর্কিটেক্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যেই দায়ী হোক না কেন, কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মন্ত্রীর ধারণা, ধ্বংসস্তূপ পুরো সরাতে আরও সাত-আট ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। এদিকে কালেক্টর জানান, আহতদের রায়গঢ় থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে মুম্বাই-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানকার হাসপাতালে তাঁরা চিকিত্সাধীন।
কীভাবে ৭ বছরের পুরনো ওই আবাসনটি ভেঙে পড়ল, তা এখনও জানা যায়নি। জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্ষায় এমন অনেক বাড়ি ভেঙে পড়ে। ভারী বর্ষণের জেরেই বাড়িটি ভেঙে পড়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।