class first boy selling fuchka
নদিয়া: শ্যামনগরের শরৎপল্লির বাসিন্দা সন্দীপন দাস। পড়ে শ্যামনগর কান্তিচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলের ফার্স্ট বয় সে। তবে বর্তমানে এই কঠিন পরিস্থিতিতে পরিবারে অর্থ জোগানের জন্য ফুচকা বিক্রি করছে সে। মাধ্যমিক দিয়ে এখন রেজাল্টের অপেক্ষা করছে।
বাবা সঞ্জয় দাস পেশায় অটো চালক। লকডাউনের কারণের অটো চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। সন্দীপনের পরিবারে আছে ৪ জন। বাবা-মা এবং সন্দীপনের যমজ বোন রণিতা। বোনও এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।
দুই সন্তানের পড়াশোনা চালিয়ে, সংসার চালাতে এমনিই হিমশিম খান সঞ্জয় বাবু। লকডাউনের জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। তাই সন্দীপনকে বাধ্য হয়ে ফুচকা বিক্রি করার কাজ করতে হচ্ছে।
সন্দীপনের বাবা সঞ্জয়বাবু জানান, ‘সংসারটা কোনওমতে চালাই। লকডাউনের ফলে চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রথমে ফুচকা যেখানে বানানো হয় সেখান থেকে ফুচকার প্যাকেট এনে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতাম। তারপর এখন স্ত্রী বাড়িতে বানায়। ছেলেটাও আমার সঙ্গে ফুচকা বিক্রি করতে বেরিয়ে পড়ে’।
জুলাইয়েও খুলছে না স্কুল, তবে নেওয়া হবে উচ্চ মাধ্যমিকের বাকি পরীক্ষা: মুখ্যমন্ত্রী
সঞ্জয়বাবু আরও জানালেন, তিনি কখনোই চান না তাঁর ছেলেটা ফুচকা বিক্রি করুক। তাহলে পড়াশোনা কখন ও করবে? এই অভাবের সংসারে সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া খুব কষ্টকর।
দুই সন্তানের নতুন ক্লাসের বইপত্রও কিনতে হবে। প্রাইভেট টিউটরের বেতনও দিতে হবে। সম্প্রতি অটো চালানো শুরু করলেও যাত্রী সেরকম পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ফুচকা বিক্রি করতেই হচ্ছে। সন্দীপন জানায়, ‘মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর স্কুল খুলে গেলে আবার সে স্কুলে যেতে চায়। কিন্তু পরিবারের এই অভাব তাকে ভাবাচ্ছে। তার থেকে ১০ মিনিটের ছোট বোনেরও পড়াশোনা কীভাবে চলবে সেই নিয়েও তার চিন্তা’।
সন্দীপন আরও জানায়, তার খুব ইচ্ছা কোনও আইআইটিতে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার। বোন রনিতা ‘নিট’ দিয়ে ডাক্তারি পড়তে চায়। কিন্তু সবকিছুর ওপর এখন চিন্তা। টাকা না থাকলে সংসার চলবে কী করে। আর তাদের পড়াশোনাই বা চলবে কী করে!
সন্দীপনের স্কুলের বাংলার শিক্ষক সুদীপ বসু বললেন, “সন্দীপন স্কুলে বরাবর ফার্স্ট হয়েছে। টেস্টেও ফার্স্ট হয়েছে। পড়াশোনা করায় ওর খুব আগ্রহ। এমন একটা ছেলের যদি পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় সেটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক হবে”।
class first boy selling fuchka