ফের কলকাতার বুকে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের দাদাগিরি, আট কিমি যেতে ৯ হাজার টাকা দাবি

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now
Instagram Channel Follow Now

ফের কলকাতার বুকে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের দাদাগিরি, আট কিমি যেতে ৯ হাজার টাকা দাবি

কলকাতা: ফের কলকাতার বুকে দাদাগিরি। সল্টলেক আমরি হাসপাতাল থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। রাস্তা আট কিলোমিটার। অথচ সেই দূরত্ব যেতেই ৯ হাজার টাকা দাবি করে বসল অ্যাম্বুল্যান্স চালক। শুধু তা-ই নয়, পুরো টাকা হাতে পাওয়ার পর এক মিনিট দাঁড়ালও না! রোগীকে মাটিতে শুইয়েই চম্পট দিল।

https://news.google.com/publications/CAAqBwgKMJ-knQswsK61Aw?hl=en-IN&gl=IN&ceid=IN:en

খাস কলকাতার ভরকেন্দ্রে এহেন অমানবিক ঘটনায় শিউরে উঠেছেন আমজনতা থেকে চিকিৎসকরাও। যদিও লকডাউনের শহরে অ্যাম্বুল্যান্সের দাদাগিরি এই প্রথম নয়। এর আগেও সাপ্তাহিক লকডাউনে চূড়ান্ত নাজেহাল হতে হয়েছে রোগীর পরিবারকে।

দিন দশেক আগে হাওড়ার বাসিন্দা অশীতিপর হরিওম আগরওয়ালের সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়েছিল। একের পর এক হাসপাতালে ঘুরে বেড না পেয়ে শেষমেষ সল্টলেকে আমরি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় হরি ওম আগরওয়ালকে। সেখানেই দিন পাঁচেক পর করোনা পরীক্ষা করা হলে দেখা যায় যে তিনি কোভিড পজিটিভ। সেরিব্রাল স্ট্রোকের কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে খরচও হয়েছিল বিপুল। হাসপাতালের বিল অনেক টাকা হয়ে যাওয়ায় সল্টলেকের ওই হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা শুরু হয়। রাজ্যের অন্যতম কোভিড হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বৃহস্পতিবার।

মেয়ে মমতা আগরওয়াল জানিয়েছেন, “বাবার জন্য সকাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্স খুঁজছিলাম। লকডাউনের কারণে কোনও গাড়ি নেই। অনেক অ্যাম্বুল্যান্স চালক কোভিড রোগী শুনেই ফোন কেটে দেন।”

শেষমেশ ন’হাজার টাকায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স মেলে। সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজের দুরত্ব মোটে ৮ কিলোমিটার। ট্যাক্সিতে যেতে যার বিল ওঠে বড়জোর তিনশো টাকা।

সেখানেই ন’হাজার টাকা কীভাবে নিচ্ছেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক তা ভেবে পাচ্ছেন না চিকিৎসকরাও। এদিকে হরিওমবাবুর অবস্থা সঙ্গীন। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ক্রমশ নামছে। ঝুঁকি না নিয়ে ৯ হাজারেই রাজি হয়ে যান তাঁর বাড়ির লোক।

অ্যাম্বুল্যান্স চালককে ৬ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়। বলা হয় বাকি টাকা হাসপাতালের সামনে পৌঁছনোর পর দেওয়া হবে। অভিযোগ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের গেটের সামনে এসে বকেয়া তিনহাজার টাকা দেওয়ার পর এক মুহূর্ত দাঁড়ায়নি অ্যাম্বুল্যান্স চালক। কার্যত মাটিতে নামিয়েই চম্পট দেয়।

রোগীর মেয়ের অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্স চালক পিপিই কিট পরেছিল। তাঁকে অনুরোধ করা হয় অন্তত জরুরি বিভাগের বাইরে পর্যন্ত বাবাকে যেতে সাহায্য করতে। কিন্তু উনি জানিয়েছেন, কোভিড হাসপাতালের সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারব না।

তবে, শহরে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের দাদাগিরি এই প্রথম নয়, এর আগে টাকা না দিতে পারার জন্য রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।

করোনা আক্রান্ত রোগীর মেয়ে মমতা আগরওয়াল হতাশায় ভেঙে পড়ে জানিয়েছেন, সরকার কি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না? শুধু আমরা একাই নই, এমন অনেক অসহায় পরিবার আছে।

এদিকে এই বিপুল ভাড়া নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালকের বক্তব্য, আমি স্রেফ গাড়ি চালাই। ভাড়া নিয়ে আমার কোনও ভূমিকা নেই। মালিকের সঙ্গে রোগীর পরিবারের টাকার রফা হয়েছে।

Author

এই খবরটা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করুন, যার এটা জানা দরকার

Make your comment