পূর্ব বর্ধমান: করোনা আবহে মানুষ চিনতে পারছে সত্যিকারের মানুষকে। কিছু মানুষের আসল রূপ দেখিয়ে দিচ্ছে এই লকডাউন পরিস্থিতি। মানুষ যে কতটা অমানকি হতে পারে, তার নিদারুণ উদাহরণ পূর্ব বর্ধমানের এই ঘটনা। লকডাউন আবহে বৃদ্ধ মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তাঁর মেয়ে ও নাতনির বিরুদ্ধে। বৃদ্ধার সমস্ত জিনিসপত্র তাঁরা আটকে রেখেছেন বলেও অভিযোগ। উপায় না পেয়ে বর্ধমান থানার দ্বারস্থ হন ওই বৃদ্ধা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। কিন্তু, বৃদ্ধার মেয়ে ও নাতনি দরজা না খোলায় ফিরে আসে।
প্রশাসনের কাছে লেখা চিঠিতে বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগর তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা ৭৮ বছরের ওই বৃদ্ধা জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর স্বামী, মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে বাড়িতে একসঙ্গে থাকতেন। ছেলে তাঁর পরিবার নিয়ে অন্য জায়গায় থাকে। আগের বছরের ২০ অগস্ট তাঁর স্বামী ৮৬ বছর বয়সে মারা যান। তারপর থেকেই মেয়ে ও নাতনি তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করে। স্বামীর বাড়ি থেকে তিনি কোথাও যাবেন না বলে জানালে, মেয়ে তাঁকে বলে বাবা মারা যাওয়ার আগে সমস্ত সম্পত্তি তাঁর নামে লিখে দিয়ে গিয়েছেন।
লকডাউন চলাকালীন ১৫ এপ্রিল ওই বৃদ্ধার সব জিনিসপত্র আটকে রেখে বৃদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে তিনি ছেলের কাছে আসেন। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘এই করোনা পরিস্থিতিতে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হল। আমার সমস্ত জিনিসপত্র আটকে রেখেছে।
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়েছিল। কিন্তু বৃদ্ধার মেয়ে ও নাতনি দরজা না খোলায় পুলিশ ফিরে আসতে বাধ্য হয়। বৃদ্ধা জানান যে তিনি তাঁর স্বামীর বাড়িতে শান্তিতে বসবাস করতে চান। এর জন্য যেন প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আপাতত বৃদ্ধা তাঁর ছেলের বাড়িতে থাকছেন। বৃদ্ধ বয়সে যাতে স্বামীর বাড়িতে তিনি শান্তিতে বসবাস করতে পারেন তার ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। নানা মহলে চিঠি দিয়েছেন। বর্ধমান থানার এক অফিসার বলেন, ‘‘পুলিশ গিয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃদ্ধা যাতে বাড়িতে থাকতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হবে।’’