কলকাতা: তারকা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি কেউ। পুলিশের দাবি মানসিক অবসাদে ভোগার কারণেই আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা। এর মধ্যে কলকাতায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৭ জনের আত্মঘাতী হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবসাদকেই কারণ হিসেবে দেখছে পুলিশ। সকলের দেহ উদ্ধার করেছে গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায়।
জানা গিয়েছে, যাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁদের বয়স ১০-৬০ বছরের মধ্যে। দেশ জুড়ে চলতে থাকা লকডাউনের কারণে বাড়িতে বন্দি হয়ে রয়েছে সবাই। অনেকের চাকরি চলে গিয়েছে। অনেকে পরিবারের লোকের থেকে দূরে রয়েছেন। আরও নানা বিষয় নিয়ে অবসাদে ভুগছেন বহু মানুষ। তাই হয়তো আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা।
লেক থানা এলাকায় আত্মহত্যা করেছে এক ছোটো ছেলে সানি মণ্ডল, বয়স মাত্র ১০ বছর। বাড়ির একটি জানালার রডে তাঁর দেহ ঝুলতে দেখা যায়। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন সে থাকতো তাঁর সৎ মায়ের সঙ্গে। তিনি ছেলেটিকে দেখাশোনা করেন। তাঁর মা লোকের বাড়ি বাড়ি কাজ করেন। দুপুরে ছাদে জামাকাপড় মেলতে যায়। তারপরই ছেলেটির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
বেলেঘাটার বাসিন্দা ইন্দ্রনীল কর্মকার, বয়স ৩০ বছর। বুধবার সকালে কালীতলা বোস লেনের বাড়ির ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ অনুমান করছেন অবসাদের কারণেই তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন।
টালিগঞ্জের হাজরা রোডে নিজের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ অবস্থায় উদ্ধার হল মোহন বাবুর। তাঁর বয়স ৪০ বছর। কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি তাঁর ঘর থেকে।
বেহালার বাসিন্দা ৭০ বছরের নকুল মণ্ডলের মৃত্যুর পেছেন শারীরিক ও পারিবারিক কোনও কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। বাড়িতে বন্ধ ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে মানসিক অবসাদের কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন বৈষ্ণবঘাটা টাউনশিপের নরেশ সাহা নামের এক বাসিন্দা।
মুচিপাড়ার পিসি বোড়াল স্ট্রিটের একটি বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ১৯ বছরের তরুণ টোটন দাসের দেহ।
রিজেন্ট পার্ক এলাকায় আত্মঘাতী হয়েছেন বছর ১৯-এর রোহিত গুপ্তা নামে এক তরুণ। জানা গিয়েছে, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করতেন। তাঁর মা-বাবা থাকেন মুম্বাইতে। ১ বছর হল রোহিত এখানে এসেছিলেন। বন্ধু-বান্ধব সেভাবে কেউ নেই। তাঁর পরিবারের দাবি, করেছেন লকডাউনে টানা ঘরবন্দি ছিল সে এবং এটাই মানসিক অবসাদের কারণ হতে পারে। তার থেকেই এই পদক্ষেপ।