গলার আওয়াজ শুনেই কি ধরা যাবে করোনা, উত্তর খুঁজছেন চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা
নয়াদিল্লি: কোনও মানুষের গলার আওয়াজ শুনেই কি বলে দেওয়া সম্ভব তিনি করোনায় আক্রান্ত কি না? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই যৌথ ভাবে গবেষণা করছেন ভারত এবং ইজরায়েলের চিকিৎসা-বিজ্ঞানীরা। গবেষণা চলছে দিল্লির তিনটি হাসপাতালে – স্যর গঙ্গারাম, রাম মনোহর লোহিয়া এবং লোকনায়ক জয়প্রকাশ। এখনও পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার ‘ভয়েস স্যাম্পল’ বা কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা পরীক্ষা করা হচ্ছে অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে।
সর্বাধিক ৩,২৩২টি নমুনার উপর কাজ চলছে গঙ্গারাম হাসপাতালে৷ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীদের আশা, সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে এই পরীক্ষার ফল সামনে চলে আসবে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই পরীক্ষা সফল হলে ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে করোনার পরীক্ষা করা আরও সহজ হবে। কারণ, একদিকে যেমন খরচ অনেকটা কম হবে, তেমনই পরীক্ষার ফলও জানা যাবে দ্রুত।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, ৫ থেকে ৬ মিনিটের মধ্যে এই পরীক্ষার গোটা প্রক্রিয়াটি শেষ করা সম্ভব! কিন্তু, শুধুমাত্র কণ্ঠস্বর দিয়ে কি করোনা পরীক্ষা সম্ভব?
এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ ভীষণ ভাবে আশাবাদী তো কারও বক্তব্য, না আঁচিয়ে বিশ্বাস করা যাবে না। স্যর গঙ্গারাম হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসক এস পি বায়োত্রার কথায়, ‘অনেক ভাবেই জানা যেতে পারে, কোনও ব্যক্তির করোনা হয়েছে কি না৷ ভয়েস স্যাম্পলও তার মধ্যে একটি।
আগামী তিন-চার সপ্তাহের মধ্যেই এর ফলাফল জানা যেতে পারে। দেশের নিরিখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে এই ফলাফল৷’ চিকিৎসক জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ‘ডিআরডিও’র বিজ্ঞানীরাও এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত আছে।
উল্টোদিকে, এ ধরনের গবেষণা নিয়ে একটু সাবধানেই এগোনো উচিত বলে মনে করছেন দিল্লি এইমসের এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁর বক্তব্য, ‘করোনার মতো বিপজ্জনক এবং সংক্রামক রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত৷ মাত্র হাজার সাতেক ব্যক্তির ভয়েস স্যাম্পল পরীক্ষা করে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়াটা হঠকারিতা হয়ে যাবে বলেই মনে হয়।
তাঁর মতে, ‘ট্রায়ালের প্রথম দফায় সাফল্য এলে নিঃসন্দেহে তা অত্যন্ত ভালো খবর। কিন্তু, এই পরীক্ষার পরিধি আরও বাড়িয়ে দেখা উচিত। না হলে ত্রুটি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’ প্রায় একই সুরে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার প্রধান তথা তৃণমূলের চিকিৎসক-সাংসদ শান্তনু সেন৷