Durga Puja 2022

Durga Puja 2022: আগে হত মহিষ বলি, অমরাগড়ীর রায় পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন দুর্গোৎসব এখন কেমন?

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now
Instagram Channel Follow Now

Durga Puja 2022

অভিজিৎ হাজরা , আমতা, হাওড়া : এই পুজা সম্পর্কে জানার আগে এই পরিবারের শ্রী শ্রী ঁ গজলক্ষী মাতা স্টেট সম্পর্কে জানা দরকার। এই স্টেটটি গঠিত হয়েছিল বাংলার ১১২৬ সালের ১৫ ই তে বৈশাখ। বর্তমানে ৩০৩ বছরে পদার্পণ করেছে এই স্টেটটি‌। এই স্টেটের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্বর্গীয় শান্তি রায়।এই শান্তি রায় বানিজ্য করতেন এবংদেশে দেশে ঘুরে বেড়াতেন। একদিন তিনি বানিজ্য করতে বেরিয়ে এই গ্ৰামে রাত্রীযাপনের জন্য নোঙর বাঁধেন। সেই রাত্রে মা ঁ গজলক্ষী দেবী সর্গীয় শান্তি রায়কে স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন, ‘ কিরে আমাকে ছেড়ে চলে যাস না-তুই আমার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা ‘ । সেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি শ্রী শ্রী ঁ গজলক্ষী মাতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রী শ্রী ঁ গজলক্ষী মাতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে তিনি অমরাগড়ী গ্ৰামে বসবাস শুরু করেন।গ্ৰামবাসীদের নিয়ে গড়ে তোলেন শ্রী শ্রী ঁ গজলক্ষী মাতা স্টেট।

https://news.google.com/publications/CAAqBwgKMJ-knQswsK61Aw?hl=en-IN&gl=IN&ceid=IN:en

তিনি বাইরে থেকে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষজনদের এনে এই গ্ৰামে বসবাস করান এবং এই গ্ৰামটিকে একটি আদর্শ গ্ৰামে রূপান্তরিত করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই স্টেট একই ভাবে একই নিয়মে চলে আসছে। এই স্টেটের বিভিন্ন পূজার্চনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রথযাত্রা,জম্মাষ্টমী,রাসযাত্রা,চৈত্র সংক্রান্তি,১ লা বৈশাখ,ঝাঁপ ও গাজন, শিবরাত্রি পূজা,চাঁচড় ও দোল উৎসব,মকর সংক্রান্তি,দশহরা। এছাড়া নিত্যসেবা,শ্রী শ্রী ঁ গজলক্ষী দেবী ও তিনটি শিব মন্দিরের পূজা এখনও চলে আসছে। সেই সঙ্গে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব মহাপূজা দুর্গা পুজা ও চলে আসছে ধারাবাহিক ভাবে।

এই স্টেটের বর্তমানে সভাপতি নিশিথ কুমার রায়, সম্পাদক শ্রী গৌরাঙ্গ মোহন রায়,সহ সম্পাদক সৌরভ রায় দ্বারা দুর্গাপূজা সহ অন্যান্য উৎসব পরিচালিত হচ্ছে। অমরাগড়ী গ্ৰামের শ্রী শ্রী ঁ গজলক্ষী মাতা স্টেট এর দুর্গাপূজা এই বছর ৩০৩ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। এই পূজার বৈশিষ্ট্য এক চালা প্রতিমা, চামুণ্ডা মূর্তি। এই পূজা মহালয়ার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে শুরু। দেবীর চন্ডীপাঠ,নিত্যদিনের সন্ধ্যারতির মাধ্যমে প্রতিপদের দিন থেকে রায় পরিবারের দুর্গোৎসব পূর্ণ মাত্রা এনে দেয়।

মূল্যস্ফীতি নষ্ট করে ঘরের বাজেট, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও কম কিনছে মানুষ, দেখুন কী বলছে রিপোর্ট?

কথিত আছে,প্রায় ১৮০ বছর আগে এই পূজায় মহিষ বলি হত। বর্তমানে বলি বন্ধ।কারণ ১৮০ বছর আগে অমরাগড়ী এলাকাটি ছিল জলা-জঙ্গলে ভরা ছিল।শোনা যায়,এক বছর দুর্গাপূজার সন্ধিপূজার সময় ছিল রাত্রে।কামার মহিষ বলি দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রাত্রে বেরিয়েছিল। রাস্তায় কামারকে হঠাৎ বাঘে ঘেরে।কামার বাঘের ভয়ে সামনের একটি গাছে উঠে পড়ে। অনেকক্ষণ কামার গাছে বসে আছে। এদিকে সন্ধিপূজার বলির সময় এগিয়ে আসছে।বাঘ ও গাছের নিচে থেকে সরছে না। পূজা মন্ডপে সন্ধিপূজার ঘন্টা পড়ছে।তখন ও বাঘ গাছের নিচে থেকে সরছে না।তখন কামার মায়ের নাম স্মরণ করে গাছ থেকে লাফ দিয়ে বাঘের ঘাড়ের উপর পড়ে।কামারের হাতে থাকা কাতানের আঘাতে বাঘের মুন্ডুছেদ হয় ও সন্ধিপূজার বলি ও ওখানেই সমাপন ঘটে। সেই রাত্রে দেবী স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন, ‘ কিরে আমার বাহনকে মেরে ফেললি? তোরা বলি বন্ধ কর ‘। সেই থেকেই বলি বন্ধ।

এই পূজার পঞ্চমীর দিন বাড়ির মেয়ে-বৌয়েরা প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ নারকেল নাড়ু তৈরী করেন। সপ্তমীর দিন নবপত্রিকাকে পালকি মত করে দুলিয়ে দুলিয়ে প্রবেশ করান হয়। অষ্টমীর দিন একই সময়ে সন্ধিপূজা,হোম,ধুনোপোড়া,আরতি এবং ১০৮ টি প্রদীপ জ্জ্বালানো হয়। পূজার নবমীর দিন সন্ধ্যেবেলায় লুচি ও দানাদার ভোগ সবাইকে বিতরণ করা হয়। এই পূজার আর একটি বৈশিষ্ট্য, এই দুর্গা প্রতিমা দশমীর দিন দুপুর ১২ টার পর বিসর্জন হয়।এর কারণ প্রায় ১৫০ বছর আগে এই রায় পরিবারের এক সদস্য দশমীর দিন দুপুর ১২ টার সময় মারা যান। সেই থেকেই দূর্গাপ্রতিমার বিসর্জন দুপুর ১২ টার পর হয়ে আসছে। এই দূর্গা প্রতিমা বিসর্জন হয় পাশের প্রতিষ্ঠা করা রথ পুকুরে।অমরাগড়ী গ্ৰামে একটিই দূর্গা পূজা।এটি রায় পরিবারের পুজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।গ্ৰামের সবাই এসে পূজায় ভিড় জমায়। বর্তমানে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। ফলে পুজার জৌলুস কিছুটা কমেছে।

যাই হোক, বিভিন্ন জেলার মতোই হাওড়া জেলার জয়পুর থানার অমরাগড়ী গ্ৰামের এই প্রাচীন দুর্গোৎসব আজ ও ধারাবাহিক ভাবে চলে আসছে। Durga Puja 2022

Author

এই খবরটা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করুন, যার এটা জানা দরকার

Make your comment