আমফান-লকডাউনে দিশেহারা, অভাবের তাড়নায় মাটি কাটছে শিক্ষিত যুবকরা

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now
Instagram Channel Follow Now

ঘোড়ামারা: ঝড়ে ঘর নিশ্চিহ্ন। শেষ করে দিয়েছে রোজগারের জায়গাটুকুও। যার ফলে চরম আর্থিক অনটন প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে। আর তাই এম এ ফাস্ট ক্লাস ইতিহাস অনার্স থেকে পলিটেকনিক পাশ করা যুবক রোজগারের আশায় সবাই ঝুঁকেছে ১০০ দিনের কাজে।

হুগলী নদী আর বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে জেগে থাকা ঘোড়ামারা নামে ছোট্ট একখানি দ্বীপে চোখে পড়ল এমন ছবি। বুলবুলের ধাক্কায় আগেই আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল। তবে, টা সামলে ওঠার আগেই আম্ফান এসে বেঁচে থাকার সব জায়গাকেই মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।

https://news.google.com/publications/CAAqBwgKMJ-knQswsK61Aw?hl=en-IN&gl=IN&ceid=IN:en

নাম তুফান মাইতি। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র পড়ায়। তবে, এখন আর্থিক অনটনের শিকার হয়ে জটিল অঙ্কের সমাধান করা মাথাই ব্যবহার করতে হচ্ছে মাটি তোলার কাজে। তুফান বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে লেটারস মার্কস নিয়ে পাশ করেছি।
বাবার দুবিঘা পানের বরাজের পড়াশোনা চলছিল।

স্নাতক স্তরে অঙ্কে অনার্স নিয়ে পরেছি। এরপর অঙ্ক নিয়েই এমএসসি(ফাস্ট ক্লাস) পাশ করেছি। টিউশন ও চাকরির পরীক্ষার জন্য কলকাতায় ছিলাম। কিন্তু লকডাউনে বাড়ি চলে আসতে হল। টিউশন করতাম তাও বন্ধ। কেননা, কেউ টাকা দিতে পারছে না।

পরিবারের রোজগেরের জায়গা পানের বরাজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পেট তো মানে না। কাজ না করলে চলবে কি করে? আর তাই মাটি কাটার কাজ করছি।

এ তো গেল একজনের কথা। এমন আরও আছে শিক্ষিত যুবকদের বেকারত্তের অসহায় কাহিনি। আর তাঁর উপর এখন এসে জুটেছে পেটের দায়। তুফানের মতো তাপসেরও প্রায় একই অবস্থা। বাংলায় স্নাতক তাপস। পানের বরাজ ছিল। পাশাপাশি মাধ্যমিকের ছাত্র পড়াত সে। কিন্তু এখন সেসব অতীত। ঝড়ে সব শেষ হয়ে গিয়েছে।

একবেলা হাড়ি চললেও রাতে জল খেয়ে থাকেন বলে জানায় তাপস। সে আরও বলে জমানো কোন টাকা নেই। এখন আর শিক্ষিত বলে লজ্জা পেলে পেট ভরবে না। আর তাই প্রান বাঁচাতে সেও মাটি কাটার কাজ করছে।

এছাড়া ভূগোলে অনার্স এর ছাত্র শিবশঙ্কর পাল ও পলিটেকনিক পাশ করা ছাত্র বিকাশচন্দ্র দাস দুজনের মাথায়ই মাটি বোঝাই ঝুরি। কষ্ট হলেও এই কাজ করা ছাড়া এখন উপায় নেই তাঁদের বলে জানাচ্ছেন তারা।

তুফান, তাপস, শিবশঙ্কর, বিকাশ এর মতো এমন হাজারও হাজারও শিক্ষিত বেকারদের অসহায় করুন অবস্থার ছবি লুকিয়ে আছে পৃথিবীর আনাচ কানাচে। কেউ জানে না তাঁদের ভবিষ্যৎ কি। বা আদেও কি তাঁদের জন্য আছে কোন ভবিষ্যৎ? তাঁর উত্তর দেবে সময়ই।

Author

এই খবরটা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করুন, যার এটা জানা দরকার

Make your comment