গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত জটিলতায়ও ফিরিয়েছে পাঁচ হাসপাতাল, অবশেষে মৃত্যু অন্তঃসত্ত্বা যুবতীর
ইম্ফল: গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত জটিলতা দেখা দেওয়ায়, হাসপাতাল তাঁকে ভর্তি নিতে চায়নি। মুখের উপর বন্ধ হয়ে গিয়েছে একের পর এক দরজা। তাঁকে নিয়ে ইম্ফলের কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতালে ঘুরেছেন পরিবারের সদস্যরা । সরকারি, বেসরকারি কোনও হাসপাতালে যেতে তাঁরা বাকি রাখেননি।
কিন্তু, প্রতিক্ষেত্রেই নিরাশ হয়েছেন। রাতভর এ ভাবে ঘুরে, অসুস্থতা আরও বেড়ে যায় ওই অন্তঃসত্ত্বার। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার গর্ভস্থ সন্তানের সঙ্গেই মৃত্যু হয় ওই যুবতীর। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই মণিপুর সরকার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
মৃত যুবতীর পরিবারের অভিযোগ, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ইম্ফলের সবক’টি হাসপাতালে তাঁরা ঘুরেছেন। হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে ডাক্তার নেই। পাঁচটি হাসপাতালের পাঁচটিই একই কথা বলে তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছে। গর্ভস্থ জটিলতায় চিকিত্সার সুযোগ না-পেয়ে, শেষ পর্যন্ত মারাই যান বছর কুড়ির ওই যুবতী।
জানা যায়, বুধবার বেলা ২টোয় মণিপুরের সেনাপাতি জেলার এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কানপাতলিউ কামেই নামের ওই অন্তঃসত্ত্বা যুবতীকে।
কিন্তু, গর্ভস্থ জটিলতা দেখা দেওয়ায়, ওই সরকরি হাসপাতাল থেকে যুবতীকে ইম্ফলের বড় কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। রাত ১০টায় সেনাপাতি থেকে রাওনা দিয়ে, রোগিণীকে নিয়ে ইম্ফলে পৌঁছোন পরিবারের স্বজনেরা।
ইম্ফলের দু-দু’টি সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁরা নিয়ে যান ওই অন্তঃসত্ত্বা যুবতীকে। ভর্তি করতে না-পারায়, অনেকটা সময়ও গড়িয়ে যায়। জটিলতাও আরও বাড়ে। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণের কারণে এ ভাবে বিনা চিকিত্সায় পড়ে থেকে অকালে মৃত্যু হয়েছে।
মৃতের দাদার অভিযোগ, আমাদের সঙ্গেই বোনের কোভিড টেস্ট রিপোর্ট ছিল। বোনের টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ আসায়, আমাদের ধারণা হয়েছিল, ভর্তি করতে সমস্যা হবে না। কিন্তু, তার পরেও যে হাসপাতালগুলি আমাদের ফিরিয়ে দেবে, কল্পনাও করতে পারিনি।
মণিপুরের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এল জয়ন্তকুমার সিং জানান, এই ঘটনায় একটা তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ওই কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।