ফুলকপির পাতা বাটা: সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি খাবারের রেসিপি
ফুলকপি বাঙালিদের একটি প্রিয় সবজি। সাধারণত ফুলকপির ফুলটাই আমরা রান্নায় ব্যবহার করি, আর পাতা প্রায়শই ফেলে দেওয়া হয়। তবে এই পাতাতেও লুকিয়ে রয়েছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ। ফুলকপির পাতা দিয়ে তৈরি করা যায় “পাতা বাটা” নামের সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি পদ। এটি সহজে বানানো যায় এবং খেতেও অসাধারণ।
ফুলকপির পাতা বাটার পুষ্টিগুণ:
ফুলকপির পাতা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, এবং ফাইবারের ভান্ডার। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমশক্তি উন্নত করে এবং ত্বক সুন্দর রাখে। পুষ্টির জন্য এই পাতাকে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করাই উচিত।
উপকরণ:
ফুলকপির পাতা: ১০-১২টি
পেঁয়াজ: ১টি (মিহি কাটা)
রসুন: ৩-৪ কোয়া
কাঁচা লংকা: ২-৩টি
সর্ষের তেল: ২ টেবিল চামচ
নুন: স্বাদমতো
হলুদ গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ
শুকনো লংকা: ১টি (সাজানোর জন্য)
রান্নার পদ্ধতি
১. পাতা পরিষ্কার করা:
প্রথমে ফুলকপির পাতা ভালো করে ধুয়ে নিন। পাতার নিচের শক্ত অংশ কেটে বাদ দিয়ে ছোট ছোট টুকরো করুন।
২. পাতা সিদ্ধ করা:
একটি পাত্রে জল গরম করে তাতে নুন দিয়ে পাতাগুলো সেদ্ধ করুন। পাতাগুলি নরম হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
৩. পেস্ট তৈরি করা:
সিদ্ধ করা পাতা, রসুন এবং কাঁচা লংকা একসঙ্গে মিহি করে পেস্ট বানান। গ্রাইন্ডার ব্যবহার করলে সহজে হবে।
৪. ভাজা এবং মশলা মেশানো:
একটি কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে তাতে শুকনো লংকা ও পেঁয়াজ দিন। পেঁয়াজ লালচে হলে হলুদ গুঁড়ো এবং বাটা পাতা যোগ করে নাড়তে থাকুন। ৫-৭ মিনিট মাঝারি আঁচে রান্না করুন।
৫. সাজানো এবং পরিবেশন:
ফুলকপির পাতা বাটা গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। উপরে সামান্য সর্ষের তেল ছড়িয়ে দিলে স্বাদ আরও বেড়ে যাবে।
ফুলকপির পাতা বাটার উপকারিতা:
এই পদটি যেমন সুস্বাদু, তেমনই পুষ্টিকর। এটি খুব অল্প খরচে তৈরি করা যায় এবং প্রতিদিনের খাবারে নতুনত্ব আনে। ফুলকপির পাতা বাটা আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে এবং খাবারের স্বাদ বাড়বে।
টিপস:
-পাতায় তেতো ভাব থাকলে সেদ্ধ করার সময় সামান্য চিনি দিন।
-চাইলে নারকেলের কোরানো বা সর্ষে বাটা মিশিয়ে নতুন স্বাদ আনতে পারেন।
-ঘি ব্যবহার করলে আলাদা ঘ্রাণ এবং স্বাদ পাবেন।
ফুলকপির পাতা বাটা বাঙালি রান্নার একটি পুরোনো ঐতিহ্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পদের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমে গেলেও, এটি আবার ফিরে আসছে আমাদের প্রতিদিনের রান্নায়। ফুলকপির ফুলের মতো পাতাও যে খাবারে ব্যবহৃত হতে পারে এবং সুস্বাদু কিছু তৈরি করা যায়, তা এই রেসিপি দিয়ে প্রমাণিত। আজই এই রেসিপি চেষ্টা করে দেখুন।