কলকাতা- রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে অপসারণের দাবি নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের দ্বারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের দাবি সাংবিধানিক সীমারেখা লঙ্ঘন করছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ৷
এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে ৬ পাতার স্মারকলিপি জমা দিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের আরও আভিযোগ প্রতিনিয়ত সংবিধান লঙ্ঘন করে চলেছেন রাজ্যপাল। যাবতীয় নিয়মকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে প্রকাশ্যে রাজ্যের সমালোচনা করে চলেছেন। ওই পদে থাকার যোগ্য নন তিনি।
এদিন সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘দিল্লি শাহেনশাহদের দেওয়া কাজ করছেন রাজ্যপাল ৷ তাদের দেওয়া লক্ষ্য পূরণ করছেন জগদীপ ধনখড় ৷ সংবিধান মানছেন না তিনি ৷ সংবিধানে তাঁর অধিকার ও দায়িত্ব স্পষ্ট করেই দেওয়া হয়েছে ৷ সংবিধানে বলা হয়েছে রাজ্যপাল নিয়মতান্ত্রিক প্রধান ৷ রাজ্য মন্ত্রিসভার সুপারিশে কাজ করেন রাজ্যপাল ৷ দিল্লির নির্দেশে চলেন জগদীপ ধনখড় ৷ বিজেপির রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা কার্যকর করছেন ৷ রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে অবমাননা করছেন ৷’
লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেপুটি নেত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদার, রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় তাতে স্বাক্ষর করেন। কবে, কোথায় কী মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল এবং কী ভাবে সাংবিধানিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, বিশদে তা তুলে ধরা হয়েছে ওই স্মারকলিপিতে।
বুধবার সকালেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বলেন, ‘২১-এর নির্বাচনে তাণ্ডব হবে ৷ আমার প্রথমদিন থেকে চেষ্টা নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় ৷’ রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়েই নতুন করে সরব তৃণমল কংগ্রেস। রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্নে তুলে সাংসদ সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘উনি বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু যাতে হয় দেখব, উনি কে? এজন্য তো নির্বাচন কমিশন আছে,আরেকটি সাংবিধানিক সংস্থা ৷ ওনাকে কে ক্ষমতা দিয়েছে? সুপ্রিম কোর্টের পুরনো এক মামলার রায় তুলে ধরে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘মন্ত্রীসভার নির্বাচিত মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পাঠিয়ে বলা সংবিধান বিরুদ্ধ ৷ রাজ্যপালের সে অধিকার নেই ৷ সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টকে অমান্য করছেন রাজ্যপাল ৷ সংবিধানের ১৫৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালকে সরানোর দাবি জানিয়েছি। ’
অন্যদিকে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র দাবি, রাজ্যপাল সংবিধান মেনেই কাজ করছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে তৃণমূলের যাওয়ায় কোনও প্রভাব পড়বে না বলে তিনি মনে করেন। তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতি রাজ্যপালের ভূমিকা সম্বন্ধে নিজে যা বুঝবেন, সেটাই করবেন। তবে তৃণমূল ভয় পেয়েই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজয়বর্গীয়।