বসিরহাট: সন্তান না হওয়ার অভিযোগে গৃহবধূকে পূড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠলো শ্বশুড়বাড়ির বিরুদ্ধে। নির্মম এই ঘটনাটি ঘটেছে হাসনাবাদ থানার রামেশ্বরপুর গ্রামে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩ বছর আগে বসিরহাটের সাকচূড়া দাশপাড়ার রিয়া দাস-এর সঙ্গে হাসনাবাদ রামেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা দেবব্রত দাসের ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে তাঁদের এই সম্পর্ক মেনে বিয়েতে রাজি ছিলেন না রিয়ার বাবা-মা। তা সত্ত্বেও, ভালোবাসার বিয়েকে স্বীকৃতি দিতে পরে তাঁরা এই বিয়ে মেনে নেন।
কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের ৬ মাস পর থেকেই রিয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে শুরু করে স্বামী দেবদাস। বারবার বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দেওয়া হতো রিয়ার উপর। এমনকি বাপের বাড়িতেও যেতে দেওয়া হতো না রোয়াকে। এই নিয়ে একাধিকবার রিয়ার সঙ্গে তার স্বামী দেবব্রত দাস, শাশুড়ি বাতাসি দাস ও শ্বশুর সঞ্জয় দাস-এর ঝামেলা শুরু হয়। এরপর অত্যাচারের সীমা বেড়েই চলে। এমনকি রিয়ার মাথায় হাতুড়ির বাড়ি মারার অভিযোগ ওঠে শ্বশুর শাশুড়ি ও স্বামীর বিরুদ্ধে। সেই সময় আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হয়।
কিন্তু পরে আবার অশান্তি শুরু হয় অন্য এক বিষয় নিয়ে। অভিযোগ, সন্তান না হওয়ার জন্য রিয়াকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন তাঁর শাশুড়ি। এমনকি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হতো বলে অভিযোগ করেছেন রিয়ার মা সুমিত্রা দাস।
অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যে বেলায় রিয়ার স্বামী তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকি এই কাজে মদত দিয়েছে তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িও, এমন অভিযোগ করেছেন মৃতার মা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রবিবার দুপুরে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
হাসনাবাদ থানার পুলিশ মৃতার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের সোমবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে। মৃতার মা সুমিতা দাস ও বাবা সুকুমার দাস তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।