নয়ডা: পড়াশোনার জন্য হরিয়ানা থেকে নয়ডায় এসে থাকত দুই বোন। বড় বোনের বয়স ১৪ বছর এবং ছোট বোনের বয়স ১৩ বছর। নয়ডার সেক্টর ১১৪-এর অর্শ কন্যা গুরুকুল স্কুলে পড়তো তাঁরা এবং সেখানকার হস্টেলেই থাকত। সেই হস্টেলের ঘর থেকেই উদ্ধার হয় বড় বোনের ঝুলন্ত দেহ।
স্কুলের পক্ষ থেকে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলা হলেও বাড়ির লোকের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তারপর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ৩ জুলাই। জানা গিয়েছে, ওই সময় কিশোরীর ছোট বোন সহ প্রায় ৪৫ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী স্কুলে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার দিন স্কুল থেকে ফোন করে কিশোরীর বাবা-মাকে সব জানিয়েছিলেন স্কুলের অধ্যক্ষ। কিন্তু, ঘটনার এতদিন পর কেন অভিযোগ করছেন বাবা-মা? প্রশ্ন এখানেই!
তাঁরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন হরওয়ানা বাড়ি থেকে বেরিয়ে সকাল ১০:৩০ টায় তাঁরা নয়ডার ওই স্কুলে পৌঁছান। তাঁরা পৌঁছনোমাত্রই স্কুল কর্তৃপক্ষক্ষ তাঁদের মোবাইল ফোন নিয়ে নেন বলে অভিযোগ। তারপর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় মেয়ের ঘরে এবং তাঁর দেখেন পাখা থেকে ঝুলছে তাঁদের মেয়ের দেহ। এর পাশাপাশি স্কুলের পক্ষ থেকে মেয়েটির লেখা একটি সুইসাইড নোটও দেখানো হয়, যা তাঁর বাবা-মা তাঁদের মেয়ের লেখা বলে মানেননি।
তাঁরা আরও অভিযোগ করেছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ হুমকি দিয়ে তাঁদের অবিলম্বে মেয়ের সৎকার করতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু তাঁদের মেয়ে ঠিক কোন পরিস্থিতিতে মারা গেল, তা জানতে তাঁরা এখন পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাশাপাশি মৃতা কিশোরীর মা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মেয়ের বিচার চেয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যা ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। নয়ডা পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছে যে ওই কিশোরীর মৃত্যুর পর পুলিশকে খবর দেওয়া উচিত ছিল। খবর না দেওয়াটা তাদের পক্ষে বড় গাফিলতি হয়েছে। তবে ওই কিশোরী আত্মহত্যাই করেছে বলে এখনও দাবি করা হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে। তাদের দাবি, মৃতার সুইসাইড নোটে সে তাঁর মৃত্যুর জন্য গুরুকুল বা তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যই দায়ী নয় বলে লিখে গিয়েছে। সে লিখে গিয়েছে, তাঁর জীবনের কোনও অর্থ নেই। সে সকলের বোঝা। গুরুকুলের এক শিক্ষার্থীর দাবি, ঘটনার ১ দিন আগেই মৃতা কিশোরীর সঙ্গে তাঁর বোনের ঝগড়া হয়েছিল।