বাংলাদেশের নেতারা ভারতের মোকাবিলা করার স্বপ্ন দেখছেন, কিন্তু সেখানকার সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ-জামান তাদের ভোঁতা বার্তা দিয়েছেন। সেনাপ্রধান বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই বিশেষ, আমরা কখনই ভারতের বিরুদ্ধে যেতে পারি না। বাংলাদেশে সংবিধান পরিবর্তন ও সেনাপ্রধানের অপসারণের খবরের মধ্যে ওয়াকার উজ জামানের এই বক্তব্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আখ্যায়িত করে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, ঢাকা নানাভাবে নয়াদিল্লির ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেকেই চিকিৎসার জন্য ভারতে যায় এবং ভারত থেকে প্রচুর পণ্য আমদানি হয়। বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, এই সম্পর্কগুলো কোনো বৈষম্য ছাড়াই হওয়া উচিত। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সমতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কিছু অমীমাংসিত বিষয়ে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। আমরা নানাভাবে ভারতের ওপর নির্ভরশীল এবং ভারতও আমাদের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে। তাদের অনেকেই বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজ করছেন। এখান থেকে অনেকেই চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। আমরা তাদের কাছ থেকে অনেক জিনিস কিনি। তাই বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার প্রতি ভারতের একটা বড় আগ্রহ আছে, এটা একটা দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক।
বাংলাদেশ ভারতের বিরুদ্ধে যাবে না
বলেও মন্তব্য করেন তিনি । যেকোনো দেশ অন্য দেশ থেকে সুবিধা পেতে চায়। এতে দোষের কিছু নেই। আমাদের এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা উচিত। সমতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। জনগণ যেন কোনোভাবেই মনে না করে যে ভারত আমাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে, যা আমাদের স্বার্থবিরোধী। জনগণের যেন কোনোভাবেই এমন মনে না হয়,’ জেনারেল জামান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ভারতের কৌশলগত স্বার্থের বিরুদ্ধে এমন কিছু করবে না। ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েই তাদের স্বার্থকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।
সেনাপ্রধানের বড় বক্তব্য:
এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো সিনিয়র পদে অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি ভারতের পক্ষ নেওয়ার বা তার সঙ্গে সুসম্পর্ক পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দিয়েছেন। এর আগে শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্তে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ ইউনূস, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এবং তার উপদেষ্টারা বারবার শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের হুমকি দিয়েছিলেন। সেখানে হিন্দুদের ওপর হামলার বিষয়ে নীরবতা পালন করেন। হিন্দুরা বর্তমান সরকারের লোকজনের বিরুদ্ধে পেছন থেকে তাদের ওপর হামলা চালাতে উৎসাহিত করার অভিযোগও তুলেছে।