অমানবিক, বিয়ে করতে না চাওয়ায় প্রেমিকাকে খুন করে পালালো প্রেমিক
আগ্রা: রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এক সার্জেনের রক্তাক্ত মৃতদেহ। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ তাঁর ডাক্তার প্রেমিককে গ্রেফতার করে এবং তাঁকে জেরা করায় নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেন।
তিনি জানিয়েছেন, বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রেমিকাকে প্রথমে শ্বাসরোধ করেন, তারপর কুপিয়ে খুন করেন তিনি। এমনকি দেহ পোড়ানোরও চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সম্ভব না হওয়ায় রাস্তার ধারে দেহ ফেলে পালিয়ে যান তিনি।
আগ্রার এসএন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার এবং এমএস ছাত্রী যোগীতা গৌতম, বয়স ২৫ বছর। তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ডাক্তার বিবেক তিওয়ারির, ওরাইয়ে কর্মরত ডাক্তার তিনি।
জানা গিয়েছে, এসএন মেডিক্যাল কলেজে কোভিড রোগীদের দেখাশোনার দায়িত্ব ছিলেন যোগীতার। কিন্তু বুধবার থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই রাতেই আগ্রায় রাস্তার ধার থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তারপরই তাঁর ভাই-এর অভিযোগের ভিত্তিতে বিবেক তিওয়ারিকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, তীর্থঙ্কর মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস করার সময় বিবেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল যোগীতার। বিবেক তাঁর সিনিয়র ছিলেন। সেখানে পড়ার সময়েই দু’জন প্রেমের সম্পর্কে জড়ান।
বুধবার যোগীতার সঙ্গে দেখা করার জন্য ওরাই থেকে ২৪০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে আগ্রা আসেন বিবেক। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। আগ্রা পুলিশ জানিয়েছে যে জেরা করায় বিবেক জানিয়েছেন, গাড়ির মধ্যেই দু’জনের ঝগড়া শুরু হয়।
তখনই প্রথমে যোগীতার ওড়না দিয়ে তাঁর গলা চেপে ধরেন বিবেক, তারপর ছুরি দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে খুন করেন তিনি। তারপর রাস্তার ধারে যোগীতার দেহ ফেলে কাঠ দিয়ে তা চাপা দিয়ে দেন বিবেক। দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।
কিন্তু সেখানে লোকজন এসে পড়ায় দেহ ফেলে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। তাঁর গাড়ি থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, যোগীতা ও বিবেক ঠিক করেছিলেন বিয়ে করবেন। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে বোনের বিয়ের অজুহাতে বিয়ে নাকি পিছিয়ে দিতে থাকেন বিবেক। তাতে সন্দেহ হয় যোগীতার।
তিনি ভাবেন বিবেক তাঁকে ঠকাচ্ছেন। তারপর যোগীতা নাকি নিজেই বিয়েতে মানা করে দেন। সেই নিয়েই দু’জনের মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। কিন্তু সেই জন্য বিবেক যোগীতাকে খুন করবে, তা দুই পরিবারের কেউই ভাবতে পারছেন না।
স্থানীয় সার্কেল অফিসার চমন সিং চাড্ডা জানিয়েছেন, ওরাই থেকে বৃহস্পতিবার সকালে বিবেক তিওয়ারিকে গ্রেফতার করেন তাঁরা। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন যোগীতার ভাই।
জানা গিয়েছে, ওরাইয়ে বিবেকও একটি কোভিড ১৯ হাসপাতালের দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসা করছিলেন বিবেক। সেই হিসেবে নিজের ডিউটি শেষ করার পরে ১০ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা ভেঙেই তিনি যোগীতার সঙ্গে দেখা করতে যান। এই ঘটনা সামনে আসার পরে তাঁর নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে বলে খবর।