জলপাইগুড়ি নাবালিকা ধর্ষণকাণ্ডের কিনারা, গাফিলতির অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনের উপর
জলপাইগুড়ি: রাজগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন করে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়ার ঘটনার কিনারা বার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে যে অভিযুক্ত জমিরুলকে জেরা করায় খুন করার কথা শিকার করেছে সে। আর এক অভিযুক্ত রহমানের গেঞ্জি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে ওই নাবালিকা খুন করেছে বলে পুলিশি জেরায় শিকার করেছে জমিরুল।
শুক্রবার ধৃত ৩ জনকে জলপাইগুড়ি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হলে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। অন্যদিকে এই ঘটনার তদন্তে পুলিশি গাফিলতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক খগেশ্বর রায়।
গত ১০ অগস্ট রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লাল স্কুল পাড়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ১৬ বছরের নাবালিকা। দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল সে।
পরিবারের পক্ষ থেকে রাজগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় ৩০ বছরের রহমান আলি, ২৮ বছরের জমিরুল হক এবং ৩২ বছরের তমিরুল হককে। কিন্তু এখানেই উঠছে পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ।
স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান সৌকত আলির কথা অনুযায়ী, মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর তার মায়ের কল রেকর্ড পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। অভিযুক্ত রহমান আলিকেও পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তখনও মেয়েটি রহমানের বাড়িতে ছিল। কিন্তু তারপরেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েটির দেহ উদ্ধার হয়েছে।
এই ঘটনায় সরব হয়েছেন এলাকার বিধায়ক খগেশ্বর রায়। তিনি ডিএসপির কাছে পুলিশি গাফিলতির কথা উল্লেখ করেছেন। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বদলির দাবি জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্তের পাশপাশি দুষ্কৃতীদের ফাঁসির দাবিও তুলেছেন বিধায়ক খগেশ্বর রায়।
পুলিশি গাফিলতির বিষয়ে বিধায়ক প্রশ্ন তুলেছেন তদন্তকারী অফিসার দেবাশিষ পালের ভূমিকা নিয়ে। তাঁর অভিযোগ, ওই অফিসার তদন্ত চলাকালীন আসামীর সঙ্গে বসে সিগারেট খেয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, সিনিয়ার অফিসার দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করা হবে। যদি বিধায়কের অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত জমিরুল হক পুলিশি জেরায় স্বীকার করে যে রহমানের গেঞ্জি দিয়েই সে ওই নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পুলিশকে সে জানিয়েছে, নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল রহমানের।
রহমান তাকে ফোন করে বলেছিল যে সে মাসির মেয়েকে নিয়ে এসেছে। তারা দুজন একে অপরকে ভালোবাসে। আগামিকালই বাবা মায়ের সম্মতি নিয়ে বিয়ে করবে। শুধু আজ রাতটুকু আশ্রয় চায়। কিন্তু পরদিনই রহমান বলে এই মেয়েটিকে খুন না করলে তারা সকলে ফাঁসবে। তাই জমিরুল খুন করে মেয়েটিকে।
আর এক অভিযুক্ত তমিরুল হক দাবি করেছে, সে নির্দোষ। খুনের বিষয়ে কিছু জানে না। তমিরুলের বাড়িতে তারা শুধু এক রাত ছিল।