গুলির যুদ্ধে নাতিকে বাঁচিয়ে নিহত দাদু

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now
Instagram Channel Follow Now

গুলির যুদ্ধে নাতিকে বাঁচিয়ে নিহত দাদু

কাশ্মীর: রক্তে মাখামাখি দাদুর দেহ আর তাঁর নাতির কান্নার ছবি আজ দিনভর ইন্টারনেটে ঘুরেছে। ভাইরাল হয়েছে নাতির ভিডিয়ো। কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের আজকের সংঘর্ষের খবরটা তাই আর পাঁচটা দিনের চেয়ে আলাদা হয়ে ঝাঁকিয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে।

https://news.google.com/publications/CAAqBwgKMJ-knQswsK61Aw?hl=en-IN&gl=IN&ceid=IN:en

৬৫ বছরের বশির আহমেদ খান আজ বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলি-বিনিময়ের মধ্যে পড়ে মারা গিয়েছেন। ওই সংঘর্ষেই নিহত হয়েছেন সিআরপি-র হেড কনস্টেবল দীপচন্দ বর্মা।

বশিরের নাতির নাম আয়াদ। ছবি ও ভিডিয়ো পোস্ট করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ তাকে উদ্ধারের খবর জানাতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। বলেছিলেন, ‘‘রক্তাক্ত কাশ্মীরের প্রতিটি ঘটনাই আজ প্রচারের হাতিয়ার। তিন বছরের শিশুও।’’

আয়াদের মায়ের বাবা, শ্রীনগরের বাসিন্দা বশির ছিলেন নির্মাণ সংস্থার ঠিকাদার। বুধবার সকালে ব্যবসার কাজে গাড়ি চালিয়ে সোপোরে যাচ্ছিলেন। ঘণ্টা দুয়েকের পথ।

সঙ্গে নিয়েছিলেন বছর তিনেকের নাতিকে। উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা জেলায় ‘আপেলের শহর’ সোপোর। সেখানেই যে আজ সিআরপি-র সঙ্গে জঙ্গিদের ধুন্ধুমার লড়াই বেধেছে, দাদু-নাতি জানবে কী করে!

পুলিশ সূত্রের খবর, সকাল ৮টা নাগাদ সোপোরে সিআরপি-র টহলদার জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি ছুটে আসে একটি মসজিদের চিলেকোঠা থেকে। লড়াই বেধে যায়। আর সেই লড়াইয়ের মধ্যেই এসে পড়ে বশিরের গাড়ি।

প্রথমে গাড়ি ঘোরাতে চেয়েছিলেন বশির। পারেননি। নাতিকে আঁকড়ে গাড়ি থেকে নেমে আড়াল খুঁজছিলেন। তখনই ঠিক কোন দিক থেকে গুলির ঝাঁক ছুটে এসে তাঁর শরীর ফুঁড়ে দিয়েছিল, জানা নেই। মরতে মরতেও আয়াদকে জড়িয়ে রেখেছিলেন বশির। আঁচড় লাগেনি তার গায়ে।

ক্রমশ জঙ্গিরা পিছু হটেছে। মসজিদে গিয়ে দেওয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পেলেও কোনও জঙ্গিকে হাতে পায়নি সিআরপি। জখম হয়েছেন তিন জওয়ান ভোয়া রাজেশ, দীপক পাটিল, নীলেশ চৌডে।

সিআরপি-র দাবি, গুলির লড়াইয়ের মধ্যেই কয়েক জন জওয়ান আয়াদকে উদ্ধার করেন। সহকর্মীরা তখন গুলি চালিয়ে ‘কভার’ দেন তাঁদের।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আয়াদকে কোলে নিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছেন এক জওয়ান। গাড়ির মধ্যে পুলিশকর্মীরা চকলেট আর বিস্কুট দিয়ে ভোলাচ্ছেন তাকে। কিন্তু কেঁদেই চলেছে আয়াদ। চোখ মুছছে আর একটাই কথা বলছে —আমি বাড়ি ফিরতে চাই।

Author

এই খবরটা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করুন, যার এটা জানা দরকার

Make your comment