কলকাতা: যদি বলা হয় কলকাতায় কয়টি কালী মন্দির (kolkata kali mandir) রয়েছে? তবে নিশ্চিত মাথায় হাত পড়বে অনেকের। আসলে এমন তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে খুব বেশি নেই। সাধারণ বাঙালির একটা বড় অংশের কালী মন্দিরের দৌড় বলতে কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর। এরপর বরাত জোরে কেউ হয়তো বলে দেবেন ঠনঠনিয়া কালী মন্দির। কিন্তু হাতে গোনা এই কয়েকটি কালী মন্দির ছাড়া অধিকাংশ কলকাতাবাসী কালী মন্দির খুজতে বেরিয়ে পথ হাতড়াবেন। নয়তো ইদানীং সাহায্য নেবেন গুগুলের।
আসুন চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক কলকাতার বেশ কয়েকটি প্রখ্যাত কালীমন্দিরের। অবশ্যই এগুলি ছাড়াও কলকাতায় কালী মন্দির অনেক রয়েছে। সবগুলির নাম ও তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিশ্চয়ই এক প্রতিবেদনে সম্ভব না, পাঠককূল নিঃসন্দেহে এ ব্যাপারে অবগত। এবার আসুন দেখে নেওয়া যাক, কলকাতার কালী মন্দিরের কথা।
কালীঘাটের কালীমন্দির: বলা হয় কালীঘাটে দেবীর চারটি আঙ্গুল পড়েছিল । প্রচলিত রয়েছে যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্যের খুল্লতাত শ্রী বসন্ত রায় একটি ছোট মন্দির নির্মাণ করেছিলেন তাই আজকের কালীঘাট মন্দির। কালীঘাট মন্দিরে কালীপুজোর রাতে দেবীকে লক্ষ্মী রূপে এখানে পুজো করা হয়।
দক্ষিণেশ্বরের মন্দির: দক্ষিণেশ্বর যখন গড়ে ওঠে তখন কিন্তু আজকের কলকাতার সঙ্গে সে যুগের কলকাতার আকাশ পাতাল তফাৎ। দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দির আক্ষরিক অর্থেই রানি রাসমণির স্বপ্নের মন্দির। জানবাজারের রানির কথায়, কাশী যাওয়ার পথে স্বয়ং দেবী কালী তাঁকে স্বপ্নে এই মন্দির তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই মন্দির তৈরি করতে তখনকার দিনে খরচ হয়েছিল ৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। রানি ১৮৪৭-তে মন্দির নির্মাণ শুরু করেছিলেন। শেষ হয় ১৮৫৫ সালে।
ঠনঠনিয়া কালীমন্দির: জনশ্রুতি রয়েছে ১৮০৬ সাল নাগাদ এই কালী মন্দির নির্মিত হয়। তখন অবশ্য ের গড়ন মোটেই এমন ছিল না। বলা হয় ডাকাতরা নাকি এখানে মায়ের মূর্তি স্থাপন করে, যদিও এ নিয়ে মতবিরোধ আছে। শুধু ডাকাত নয়। প্রাচীন এই মন্দিরের ইতিহাসে নাম জড়িয়ে রয়েছে দুই মহাসাধকেরও। তাঁরা হলেন সাধক রামপ্রসাদ ও যুগাবতার রামকৃষ্ণদেব। ডাব আর চিনি দিয়ে এই মন্দিরের মায়ের পুজো দিয়েছিলেন রামকৃষ্ণদেব। এক সময় মন্দির প্রাঙ্গণে ধ্বনিত হতো সাধক রামপ্রসাদের কণ্ঠের গান।
ফিরিঙ্গি কালীমন্দির: কলকাতার এখনকার জমজমাট এলাকা বউবাজার মোড়ে রয়েছে ফিরিঙ্গি কালীমন্দির। বলা হয় এখানে বসেই নাকি গান গাইতেন অ্যান্টনি কবিয়াল। অনেকের মতে, ফিরিঙ্গি পাড়ার কাছাকাছি এই মন্দির। তাই এই মন্দিরের নাম হয়েছে ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি।
ঢাকুরিয়া লেক কালীবাড়ি: ১৯৪৯ সালে হরিপদ চক্রবর্তী এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরটির পোশাকি নাম শ্রীশ্রী ১০৮ করুণাময়ী কালীমাতা মন্দির। প্রায় দীর্ঘ ৫০ বছরেরও পরে ২০০২ সালে এই মন্দির ফের সংস্কারের কাজ শুরু হয়। দক্ষিণ কলকাতার রবীন্দ্রও সরোবরের ধারে অর্থাৎ ঢাকুরিয়া লেকের ধারে এই কালীমন্দির অবস্থিত।
সিদ্ধেশ্বরী বামা কালী মন্দির: আজ থেকে ২৫০ বছর আগে বরিশায় স্থাপিত হয় এই মন্দির।
kolkata kali mandir