পরিতোষ সরকার, মালদা : বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে ভুয়ো বিল করে সরকারি টাকা আত্মসাধের অভিযোগে সরব গ্রামবাসী। আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কাট মানে নিয়ে নিয়েছে বিজেপির পঞ্চায়েতের প্রধান এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের।খোদ দলেরই বুথ সভাপতি ক্ষোভ উপরে দিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে দুর্নীতিবাজ বলে শাস্তির দাবি তুলে সরব হয়েছেন। ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে এলাকারই এক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সুপারভাইজার।আর এমনই অভিযোগ এর ঘটনা সামনে এসেছে মালদা মানিকচক ব্লকের নাজির পুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানের স্বামী।
বিজেপি পরিচালিত মানিকচক ব্লকের নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রধান পদে রয়েছেন বিজেপি সদস্যা পম্পা সরকার। তার বিরুদ্ধে সরকারি টাকার অভিনয়ের অভিযোগ করেছেন লস্করপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এলাকার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সুপারভাইজার রয়েছেন রুদ্র সাহা নামে ব্যক্তি। এম জি এন আর জি এস প্রকল্পের ১০০ দিনের কাজের কাজ না করিয়ে ভুয়ো বিল করে এক লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা ইতিমধ্যে আত্মসাৎ করে ফেলেছে প্রধান বলে অভিযোগ ওই সুপারভাইজার সহ গ্রামবাসীদের। ঘটনার প্রতিবাদ করলে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে গ্রামবাসীসহ সুপারভাইজার কে এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন তারা। গোটা ঘটনায় মালদা জেলা শাসকের কাছে প্রধানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে এলাকার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সুপারভাইজার রুদ্র সাহা।তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রধান দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। কোন কাজ না হয় লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে চলেছে প্রধান। সমস্ত ঘটনার প্রতিবাদ করলে প্রধানের স্বামী হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তার। প্রশাসন যাতে করে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে অভিযুক্ত প্রধানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে সে দাবি তুলেছেন তিনি।
এদিকে প্রধানের বিরুদ্ধে আরও এক গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তাপস ঘোষ।তিনি জানান, প্রধানের স্বামী আবাস যোজনার ঘর পাওয়ার জন্য ৫০০০ টাকা কাঠ মানি নিয়েছে। কিন্তু এখনো ঘর পাওয়া তো দূর প্রধানের ও তার স্বামীর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বুধবার সহ পরিবার ও গ্রামবাসীদের নিয়ে পঞ্চায়েত দপ্তরের এসেছিলেন প্রধানের কাছে টাকা ফেরত নিতে।কিন্তু প্রধানের দেখা না পাওয়া যায়নি। এই প্রধান দুর্নীতিগ্রস্ত ।তাদের বিরুদ্ধে যাতে করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন সে দাবি তুলেছেন তিনি।
গোটা ঘটনায় পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপির লস্করপুর গ্রামের বুথ সভাপতি পিন্টু গোস্বামী।তিনি বলেন,দলের প্রধান এইভাবে দুর্নীতি করবে ভাবা যায় না। প্রধান হিসেবে বসার পর থেকে বারংবার এর প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এবারে ভুল করে টাকা তুলে ফেলেছে প্রধান। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই সমস্ত দুর্নীতিবাজ প্রধানের জন্য দলের নাম বদনাম হচ্ছে। তাই এই দুর্নীতিবাজ প্রধানের বিরুদ্ধে যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে সে দাবি করেছেন বিজেপির বুথ সভাপতি।
তবে গোটা ঘটনায় বিজেপিকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেছেন মানিকচক ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি ইমরান হাসান।তিনি বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসেনি তার আগেই দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষের কে প্রতারণা করেছে কেন্দ্র সরকার।সেইমতো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মানুষকে প্রতারণা করছে এবং ভুল বুঝিয়ে টাকা আত্মসাৎ করছে। আমরাও দাবি রাখছি প্রশাসন যাতে করে দ্রুত এই সমস্ত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।না হলে তৃণমূলের যুব নেতা কর্মীরা পথে নেমে আন্দোলন করবে এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে।
যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী সুজয় গোস্বামী।তিনি বলেন,দুর্নীতির সাথে যুক্ত নয় আমি। যারা অভিযোগ করছে তারা দুর্নীতি করেছিলেন।তাতে আপোষ না করায় এই ভাবে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।