লড়াই ২৪ ডেস্ক: তালিবানি অত্যাচার থেকে বাঁচতে এই ছিল তাঁর এক মাত্র পথ। নাম নাদিয়া গুলাম। একজন মহিলা হয়েও জীবনের দশটা বছর কাটিয়েছেন পুরুষ সেজে। তিনি একজন আফগান মহিলা। আপাতত থাকেন কাতালনিয়ায় শরণার্থী হিসাবে থাকেন তিনি। তাঁর এই বেঁচে থাকার লড়াইকে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর লেখনীতে।
আফগানিস্তানের প্রতিটি মহিলার মতো তিনিও হয়েছিলেন নিষ্ঠুর গৃহযুদ্ধ, ক্ষুধা ও তালিবানের শাসনের শিকার। কিন্তু হার মানেননি।
১৯৮৫ সালে জন্ম তাঁর। আফগানিস্তানে তালিবানি শাসনের চরম সময়েও পরিবারের হাল ধরতে পিছুপা হননি তিনি। কিন্তু শরিয়ত আইনে মেয়েদের উপার্জন তো দূর বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্যও বাঁধা একাধিক নিয়মকানুন। কিন্তু সেখানেও তালিবানদের ধোঁকা দেন নাদিয়া। নিজের ম্রিত ভাইয়ের পরিচয়েই বাইরের সমস্ত কাজ সামলাতেন নাদিয়া। নিজের গোটা জীবনের দশটা বছর এই অবস্থাতেই কাটান তিনি।
২০০৬ সালে বোমা হামলায় গুরুত্বর আহত হন নাদিয়া। চিকিৎসার জন্য চলে আসেন স্পেন। তারপর থেকে সেখানেই থাকতে শুরু করেন।
স্পেনে থাকাকালীন নিজের জীবনের এই লড়াইয়ের কাহিনি তুলে ধরেন একটি লেখনীর মাধ্যমে। বইটির নাম দেন ‘দ্যা সিক্রেট অফ মাই টারবান’। বইটি প্রকাশের সাথে সাথে শোরগোল ফেলে দেয় গোটা বিশ্বে। এই বইটি লেখায় তাঁকে সাহায্য করে সাংবাদিক অ্যাগনেস রটগের।
২০১০ সালে নাদিয়ার এই বইয়ের জন্য বিখ্যাত প্রুডেন্সি বার্ট্রানা খেতাব লাভ করেন। এরপর আফগানিস্তান সংক্রান্ত বহু তথ্যচিত্রেই তাঁকে দেখা গিয়েছে। বিগত ১৫ বছর ধরে তিনি বারবার সাবধান করেছিলেন, ‘তালিবানরা কিন্তু আফগানিস্তান ছেড়ে যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেখাতে চাইছে যে তালিবানরা নেই। কিন্তু সেটা একটা বড়সড় মিথ্যা।’
তাঁর কথাই বর্তমানে সত্যি প্রমাণ হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটু সরতেই স্বমূর্তিতে ফিরেছে তালিবানরা। তাঁর মতে, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো আফগানিস্তানে থেকেছে বছরের পর বছর। এই সময়টা তারা অস্ত্রের জোগান দিয়েছে, দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারের সমর্থন করেছে এবং এখন সেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এটা বেইমানি বললেও কম বলা হবে।’
বর্তমানে তিনি ব্রিজেস ফর পিস অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। যারা আফগানিস্তানে মোট ৩৫ জন নাবালিকার পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই খবরটা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করুন, যার এটা জানা দরকার