জমি নিয়ে বিবাদের জেরে ভাই খুন, অভিযুক্ত দাদা-ভাইপো
নদিয়া: জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এক ব্যক্তিকে খুন করার অভিযোগ উঠল তাঁর দাদা এবং ভাইপোর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রানাঘাট থানার জিরাট পাড়া এলাকায়। রবিবার রাত ১০ টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। মৃতের নাম বিশ্বনাথ বিশ্বাস, বয়স ৪৩ বছর।
জানা গিয়েছে, ছোট ভাই বিশ্বনাথ বিশ্বাস এবং বড় ভাই বাপি বিশ্বাস একই উঠানের পাশে আলাদা ঘরে থাকতেন। দুই ভাই পেশায় দিনমজুর। তাঁদের বাড়ি ও বাড়ি লাগোয়া বিঘে খানেক জমি আছে।
বাড়ির জমি বিশ্বনাথের নামে নয়। সেই জমির একাংশ কেনার জন্য সব টাকা বাপিকে দিলেও সে রেজিস্ট্রি করতে চাইছিল না কিছুতেই। তাই নিয়ে শুরু হয় ঝামেলা।
কয়েক বছর আগে বাপির কাছ থেকে জমির একাংশ কিনেছিলেন বিশ্বনাথ। জমিটি কেনার জন্য তিনি সুদে টাকা ধার করেন। অভিযোগ, টাকা পেয়ে গেলেও বাপি সেই জমির দলিল ভাই-এর নামে করে দিতে চাইছিল না।
বিশ্বনাথও কোনও মতে প্লাস্টিক টাঙিয়ে ছোট্ট একটি ঘরের মধ্যে স্ত্রী, ১০ বছরের ছেলে ও ১৪ বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকছিলেন।
সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে ঘরের জন্য এবং সরকারের কাছে বিদ্যুতের জন্য আবেদন করেছিলেন বিশ্বনাথ। পঞ্চায়েত থেকে ঘর মঞ্জুর করা হলেও সেই জমি বিশ্বনাথের নামে না হওয়ায় টাকা মঞ্জুর হচ্ছিল না। তাই তাঁকে বারবার হতাশ হতে হচ্ছিল। তাই নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে বাপির সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলছিল।
যে জমির জন্য তিনি টাকা দিয়েছেন, সেই জমি তাঁর নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার দাবি নিয়ে রবিবার রাতে আবার বাপির কাছে যান বিশ্বনাথ। অভিযোগ, তখন বাপি ও তাঁর ছেলে উজ্জ্বল শাবল ও কোদাল দিয়ে বিশ্বনাথকে মারধর করে।
রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিশ্বনাথকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।
বড় ভাই বাপি বিশ্বাস এবং তাঁর ছেলে উজ্জ্বল বিশ্বাসের নামে রানাঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিশ্বনাথের স্ত্রী লতিকা বিশ্বাস। ঘটনার পরে রাতেই পালিয়ে যায় বাপি, উজ্জ্বল এবং বাপির স্ত্রী। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।