লড়াই ২৪ ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে সব স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সমস্ত স্তরের পড়ুয়ারাদের মধ্যে প্রথম স্তরের পড়ুয়াদের ক্ষতি বেশী হয়েছে । স্কুলের সঙ্গে প্রায় দেড় বছর কোনো সম্পর্ক নেই, স্কুলে এক ধরা বাঁধা নিয়ম ছিলো। দীর্ঘ দিন পড়াশোনার সাথে সম্পর্ক নেই তাদের । স্কুল ছাড়া, একসঙ্গে ক্লাস করার অভ্যাসটা প্রায় অদৃশ্য । বিষয়টি স্কুল ছুটে পরিণত হয়েছে । দীর্ঘদিন স্কুল ছুট থাকায় সেই খুদে পড়ুয়াদের পাঠদানে সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন লিভার ফাউন্ডেশন ও ‘ প্রথম ‘ নামে পড়াশোনার মানোন্নয়ন সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যুক্ত একটি সংস্থান।
এই কর্মসূচী শুরু হয়েছে সিউড়ি ১ ব্লকের নগরী গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। পাড়ার মধ্যে একটি জায়গা বেছে নিয়েছেন তারা । নিয়মিত প্রথম স্তরের খুদেদের শিক্ষা প্রদান করেন এই এলাকার মহিলা স্বনির্ভর দলের সদস্যারা ।
গত মার্চেই এলাকার প্রায় ৫৫০ জন প্রাথমিক পড়ুয়াদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আর ৬০ জন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা পাঠদানের সাহায্যের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। লিভার ফাউন্ডেশন এর কর্ণধার , বিশিষ্ট চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন ‘‘আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে নগরী গ্রাম পঞ্চায়েতে গ্রামে গ্রামে এই ব্যবস্থাপনা শুরু হয়েছে। পরে রাজ্যের অন্য জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন……….বাতিল ভারত-বাংলাদেশ উড়ান, বাঁধাপ্রাপ্ত ব্যবসা, চিকিৎসা, পর্যটন
ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পড়াশোনা সবার জন্য সম্ভব নয়। তাই এই লিভার ফাউন্ডেশন ও ‘ প্রথম ‘ উদ্যোগ নিয়েছে। দুই সংগঠনেই যুক্ত সদস্যরা জানাচ্ছেন , প্রান্তিক পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়াদের শিক্ষার এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । অনেকে পড়াশোনা পুরোপুরি ছেড়ে দিয়ে পরিবারকে সাহায্য করার কাজে লেগে গিয়েছে । তাদের কথা ভেবেই এই দুই সংস্থা এগিয়ে আসে।
সমস্ত রকম করোনা বিধি মেনে শিক্ষাদান করা হয়। শিক্ষাদানের আগ্রহ দেখাচ্ছে অনেক। স্বেচ্ছাসেবী মহিলারা নিজেদের কাজ সেরে বিকেলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের পাশে থাকছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা পূজা মাল, দাঁতামণি হেমব্রম, জুলি রায়, বালিকা মুর্মু, সোমা মুখোপাধ্যায়রা। তাঁরা কেউ কাঁটাবুনিতে, কেউ নগরীতে, কেউ পাথরা, পাথরচাপুড়ির মতো গ্রামে খুদেদের পাঠদানের দায়িত্বে আছেন। ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরাও অনেক খুশি। তারা বলছেন ,” বন্ধ থাকায় ওরা খেলে বেড়াচ্ছিল, এখন তাও পড়াশোনা করছে ” ।
এই সংস্থার প্রচেষ্টায় তাদের স্কুল জীবনটা একটু হলেও ফিরে পেয়েছে।