নদিয়া: করোনা আবহে সব দিক থেকেই জীবন যেন থেমে গিয়েছে। আগের মত স্বাভাবিক কিছুই নেই! কাজ হারিয়েছে বহু মানুষ। রুটি রোজগার হারিয়ে খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে মানুষ। করোনার জন্য বন্ধ হচ্ছে একের পর এক উৎসব। ফলে সংকটের মুখে পড়েছেন এই সব উৎসবের নানা অনুসঙ্গের সঙ্গে জীবিকায় জড়িয়ে থাকা বহু মানুষ।
নদিয়া জেলার রানাঘাট পুরসভার রূপশ্রীপল্লি, শরৎপল্লি এলাকায় ঘরে ঘরে রাখি তৈরির কারখানা রয়েছে। রাখি পূর্ণিমার আগে ব্যস্ততা তুঙ্গে ওঠে সেই শিল্পীদের। গোটা বছর এই সময়টার দিকেই তাকিয়ে থাকেন তাঁরা। তাঁদের হাতে তৈরি হওয়া রাখি চলে যায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকি ভিনরাজ্যের দোকানও যায় এই রাখি।
উৎসবের ২-৩ মাস আগে থেকেই রাখি বানানোর কাজ শুরু হয়ে যায়। কারিগরদের হাতে তৈরি রাখি ৫ টাকা থেকে শুরু করে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়। মুখে হাসি ফোটে তাদের। কিন্তু এই বছর করোনার জন্য এই ছবিটা একেবারে পাল্টে গিয়েছে।
সব কিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার ভাবনা নিয়ে রাখি তৈরি শুরু হয়েছিল, শুরু হয়েছিল পসরা সাজানোও। কিন্তু পূর্ণিমা যত কাছে আসছে ততই বোঝা যাচ্ছে রাখি কেনার লোক নেই। কারিগররা জানালেন, তাঁদের ঘরে জমে রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাখি। ট্রেন বন্ধ, স্কুল-কলেজও বন্ড। তাই একেবারেই বিক্রি নেই। এদিকে জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে, মজুরিও বেড়েছে। আগামী দিনগুলোতে কী করবেন তাঁরা, এই ভেবে দিশেহারা রাখি কারিগর ও ব্যবসায়ীরা
কারিগর মঙ্গল দাস বলেন, ‘‘আমাদের কাছে মালিকরা সমস্ত জিনিসপত্র কিনে দেন। আমরা তা দিয়েই রাখি বানাই। মূলত পারিবারিক ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতেই এই শিল্পের সাথে যুক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর যা অবস্থা একটিও রাখি বিক্রি নেই। আমাদের মজুরি কী ভাবে মেটাবেন মালিকরা?’’
ব্যবসায়ী সাধন চন্দ বলেন, ‘‘স্কুল কলেজ ট্রেন সবই বন্ধ। যার ফলে বিক্রি একেবারেই নেই। অন্যান্য বছর এই সময় হাজার হাজার টাকার রাখি বিক্রি করি আমরা। এবার একশো টাকারও বিক্রি নেই।’’