জেনে নিন রথযাত্রার কিছু অজানা কথা
Rathyatra 2021 special: জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে ভারত, বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের অনেক দেশে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাড়ম্বরে পালন করা হয়। রথে থাকেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার খর্বাকৃতি মূর্তি। ভক্তবৃন্দ ভক্তিপূর্ণ চিত্তে রথের দড়িতে টান দিয়ে রথকে এগিয়ে নিয়ে যান।
শাস্ত্রে আছে ‘রথস্থ বাম নং দৃষ্টা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে।’ রথের উপরে খর্বাকৃতি বামন জগন্নাথকে দর্শন করলে তার পুনর্জন্ম হয় না। তাই রথের দড়ি ধরে রথ টানা মহাপুণ্য কর্ম বলে সনাতন ধর্মে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
এই রথযাত্রার উল্লেখ পাওয়া যায় প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ ‘ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ’ও‘পদ্মপুরাণে’ । রথযাত্রার মূলে রয়েছে বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাব। কালের পরিক্রমায় হিন্দু সভ্যতার উত্থানকালে এ রথযাত্রা ‘শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা’ হিসেবে বিবর্তিত হয়েছে। ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ ধামের রথযাত্রা জগদ্বিখ্যাত।‘পুরুষোত্তম ক্ষেত্র’বা ‘শ্রীক্ষেত্র’বলতে পুরীকেই বোঝায়। জ্যৈষ্ঠে স্নান-যাত্রায় ও আষাঢ়ে রথের সময় বিশেষ জাঁকজমকের সঙ্গে পূজিত হন।
চৈতন্য মহাপ্রভুই মূলত নীলাচলে ভক্তিবাদের প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের অবতার। তাঁর প্রেম, ভক্তি ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ – এসব মূলমন্ত্রই তাঁর জীবন-দর্শন।
মহাপ্রভুর জীবন-দর্শন শ্রী জগন্নাথের জীবন-দর্শন মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। তাই পুরীকে বলা হয় বৈষ্ণবের ধাম।পুরীর রথযাত্রা উৎসব হচ্ছে বড় ভাই বলরাম বা বলভদ্র ও বোন সুভদ্রাকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন যাত্রার স্মারক।
এই তিন জনের জন্য আলাদা আলাদা তিনটি রথ। রথযাত্রা উৎসবের মূল দর্শনীয় হল এই রথ তিনটি। প্রথমে যাত্রা শুরু করে বড় ভাই বলভদ্রের রথ।
এই রথের নাম তালধ্বজ। রথটির চোদ্দোটি চাকা। উচ্চতা চুয়াল্লিশ ফুট। রথের আবরণের রঙ নীল। তারপর যাত্রা করে সুভদ্রার রথ। রথের নাম দর্পদলন। উচ্চতা প্রায় তেতাল্লিশ ফুট। এই রথের মোট বারোটি চাকা। যেহেতু রথটির ধ্বজা বা পতাকায় পদ্মচিহ্ন আঁকা রয়েছে তাই রথটিকে পদ্মধ্বজও বলা হয়ে থাকে। রথের আবরণের রঙ লাল। সবশেষে থাকে জগন্নাথদেবের রথ। রথটির নাম নন্দীঘোষ। পতাকায় কপিরাজ হনুমানের মূর্তি আঁকা রয়েছে তাই এই রথের আর একটি নাম কপিধ্বজ। রথটির উচ্চতা পঁয়তাল্লিশ ফুট।