জুন মাসে এটি প্রচণ্ড গরম। সূর্যের তাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেক রোগের প্রাদুর্ভাবও দ্রুত বাড়ছে। গ্রীষ্মের মৌসুমে শুধু পানির স্বল্পতা বা হিট স্ট্রোক নয়, এমন চারটি রোগ রয়েছে যা সবচেয়ে বেশি বিরক্ত করে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে বাড়লেই শুরু হয় স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, একটু যত্ন ও যত্ন নিলে এসব রোগ এড়ানো যায়।
1. ছত্রাকের সংক্রমণ- গ্রীষ্মের ঋতুতে ছত্রাক বা ডার্মাটোফাইট সংক্রমণ যেমন দাদ, নখের সংক্রমণ এবং ফুসকুড়ি হওয়া সাধারণ। শরীরের যেসব স্থানে ঘাম জমে এবং তাপ ও আর্দ্রতার কারণে ছত্রাক হয় সেখানে এই সমস্যা হয়।
উপসর্গ- এর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে লালভাব, চুলকানি এবং সেই জায়গা ফুলে যাওয়া।
প্রতিরোধ- এটি প্রতিরোধ করার জন্য, আপনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিশেষ যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, আপনার হাত বারবার ধোয়া রাখা গুরুত্বপূর্ণ যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়। স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করবেন না। ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত ক্রিম এবং লোশন ব্যবহার করুন।
2. ফুড পয়জনিং- যখনই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং তাপ থাকে, তখনই গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস এবং ফুড পয়জনিংয়ের মতো রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই রোগগুলি সংক্রামিত খাবার বা জল খাওয়ার কারণে বা তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবারের কারণে হয়। এটি সাধারণত ই-কোলাই এবং সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস যেমন নরোভাইরাস ইত্যাদির কারণে হয়ে থাকে।
এ ধরনের ভাজা, তৈলাক্ত, শক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন । অ্যালকোহল, চিনিযুক্ত পানীয়, ক্যাফেইন বা নিকোটিনযুক্ত পানীয় পান করবেন না। তাজা এবং হজমযোগ্য খাবার খান। বাটার মিল্ক, নারকেলের পানি, দই-ভাত, খিচড়ি, সেদ্ধ আলু, ফল ও জুস ইত্যাদি নিন। শরীরে পানির ঘাটতি যেন না হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাবেন না। শরীরের তাপমাত্রা এবং নাড়ি পরীক্ষা করতে থাকুন।
লক্ষণ- যখন ডিহাইড্রেশন বা হিট স্ট্রোক হয়, তখন শরীরের তাপমাত্রা 103 ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে পৌঁছে যায়। নাড়ি দ্রুত হয়ে যায়, ত্বকে লাল ফুসকুড়ি দেখা যায়। মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, বিরক্তি এবং ঝাপসা কথাবার্তা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, বমি বা বমি বমি ভাব এবং পেশীতে খিঁচুনি দেখা দেয়।
3. ডিহাইড্রেশন বা হিট স্ট্রোক- গ্রীষ্মে দীর্ঘক্ষণ গরমে থাকার কারণে শরীরের শীতল যন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এতে শরীর থেকে পানি ও লবণ ঘামের আকারে বেরিয়ে যায় এবং হিট স্ট্রোক বা ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হয়।
লক্ষণ- যখন ডিহাইড্রেশন বা হিট স্ট্রোক হয়, তখন শরীরের তাপমাত্রা 103 ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে পৌঁছে যায়। নাড়ি দ্রুত হয়ে যায়, ত্বকে লাল ফুসকুড়ি দেখা যায়। মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, বিরক্তি এবং ঝাপসা কথাবার্তা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, বমি বা বমি বমি ভাব এবং পেশীতে খিঁচুনি দেখা দেয়।
করুন এই প্রতিকার- যখনই সূর্যের আলোতে বাইরে যাবেন, সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হবেন না। ঘরে থাকার চেষ্টা করুন। বাইরে গেলে মুখ ঢেকে রাখুন। পানি বা জুস পান করতে থাকুন।
4. রোদে পোড়া- জুনের গরমে অতিরিক্ত সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসার কারণে ত্বকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে ত্বক পুড়ে যায়, লাল বা কালো হয়ে যায়। কয়েকদিন ধরে ত্বকে জ্বালাপোড়া হয় এবং ত্বকের খোসা ছাড়ে।
কী করবেন- যখনই সূর্যের আলোতে বাইরে যাবেন, সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হবেন না। ঘরে থাকার চেষ্টা করুন। বাইরে গেলে মুখ ঢেকে রাখুন। পানি বা জুস পান করতে থাকুন।