বন্ধ চা বাগানের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গে । এই মুহূর্তে পাহাড়, ডুয়ার্স ও তরাই মিলিয়ে মোট ২৫টি বাগান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে শেষ ৩ মাসে বন্ধ হয়েছে ৯টি চা বাগান। সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেশের চা শিল্পের আইকন হিসেবে পরিচিত দার্জিলিংয়ের ক্ষেত্রে। সেখানে চলতি বছর বোনাস সমস্যা শুরু হওয়ার আবহে ঝাঁপ পড়েছে ৭টি বাগানে। আগামী ৩০ নভেম্বরের পর থেকে শেষ হতে চলেছে এবছরের উৎপাদনের মরশুম। তার আগে কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত না হলে শীতের শুখা সময়ে বন্ধ বাগানগুলি আদৌ খুলবে কি না তা নিয়ে ঘোরতর সংশয় রয়েছে চা মহলে।
এই মুহূর্তে বাগান বন্ধের তালিকায় রয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার ঢেকলাপাড়া, লঙ্কাপাড়া, রামঝোরা, দলমোর, কালচিনি, রায়মাটাং, দলসিংপাড়া, তোর্ষা ও মহুয়া। শেষের দুটি বাগান মাস তিনেক আগে বন্ধ হয়েছে। সবমিলিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলায় বন্ধ বাগানের সংখ্যা এই মুহূর্তে ৯। জলপাইগুড়ি জেলায় বন্ধ রয়েছে রায়পুর ও সোনালি চা বাগান। মোট সংখ্যা ২।
পাহাড়ের বন্ধ বাগানগুলি হল ধোতেরিয়া, রংমুক সিডার, মুন্ডাকোঠি, নাগেরি, চংটং, পানিঘাটা, আম্বুটিয়া, সিংতাম, রিংটং, পান্ডাম, পেশক, সুম, কুমাই ও লংভিউ। মোট ১৪টি। পাহাড়ের বন্ধ বাগানগুলি নিয়ে হস্তক্ষেপের দাবিতে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট কেন্দ্রীয় শিল্পবাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গত সোমবার চিঠি পাঠিয়েছেন।
দার্জিলিং তরাই-ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুরজ সুব্বা বলেন, ‘পাহাড়ের কয়েক হাজার শ্রমিক বিপন্ন হয়ে পড়েছেন।’ ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্সের সাধারণ সম্পাদক মণিকুমার দার্নাল বলেন, ‘বাগান বন্ধ হলে ক্ষতি সব পক্ষেরই। মালিকপক্ষকে বারবার বলা হচ্ছে সমস্যা যাই থাক না কেন আলোচনার রাস্তা খোলা রাখুন।’
ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা বলছেন, ‘চা বাগান নিয়ে রাজ্য সরকারের গা-ছাড়া মনোভাব বরাবরের। বন্ধ বাগানের সংখ্যা যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে তাতে উদ্বেগের কারণ যথেষ্ট।