কেন উদযাপন করা হয় শিক্ষক দিবস?
৫ সেপ্টেম্বর। না, ক্যালেন্ডারে লাল দাগ থাকে না বটে, কিন্তু এই তারিখটা আমাদের মনে দাগ কেটে যায় প্রতি বছর। কারণ দিনটা যে শিক্ষক দিবস, ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন। হ্যাঁ, দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ, শিক্ষাবিদ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ,দক্ষ কূটনৈতিক, জ্ঞানী পণ্ডিত ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ।
এতসব পরিচয়ের পরেও অসম্পূর্ণ থেকে যায় তাঁর পরিচয়। এই সব পরিচয় বাদ দিয়েও শেষ পর্যন্ত যে কারণে মনে রাখা যায় তাঁকে, তা হলো শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। তাঁর জন্মদিনটা শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
কিন্তু কেন! এর আগে তো এরম হয়নি কখনও! একদল ছাত্রছাত্রী মেতে উঠেছিল তাঁদের শিক্ষকের জন্মদিন উদযাপন করার জন্য। কিন্তু শিক্ষক নিজের জন্মদিন পালন করা নিয়ে তীব্র ঔদাসীন্য দেখিয়েছিলেন।
শিক্ষক নিজেই আর্জি জানিয়েছিলেন, তাঁর জন্মদিনটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করার জন্য। তিনি জানিয়েছিলেন যে কেবলমাত্র তাঁর একার জন্মদিন পালন না করে, এই দিনটিকে সকল শিক্ষকদের দিন হিসেবে পালন করলে তিনি খুশি হবেন। তাঁর এই আর্জির কথা মেনেই শিক্ষক দিবস পালন করা শুরু হল। শিক্ষকদের মনে রেখে একটা দিন তাঁদের জন্য উৎসর্গ করা হল।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং রাধাকৃষ্ণণ ছিলেন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। রাধাকৃষ্ণণ সম্পর্কে নেহরুর বলা কিছু কথা উল্লেখ না করলেই নয়। “তাঁর যথাসাধ্য ক্ষমতা দিয়ে রাধাকৃষ্ণণ দেশের সেবা করে গেছেন।
তাঁর মতো শিক্ষকের কাছ থেকে আমরা এত কিছু শিখেছি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মও শিখবে। ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের মত একজন এত বড় মাপের শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, সর্বোপরি একজন এত বড় মাপের মানুষকে পেয়ে ভারত ধন্য।”
১৮৮৮ সালের এই দিনটায় তিরুতানি শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের। বাবা চেয়েছিলেন ছেলে ধম্মকম্মে মন দিক। কিন্তু ছেলে মন দিলেন দর্শনে। তিরুপতিতে স্কুলের গণ্ডী পেরিয়ে মাদ্রাজের খ্রিষ্টান কলেজে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা।
কর্মজীবনের প্রথম দিকে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা করার সময় শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। বয়স তিরিশের কোঠায় যাওয়ার আগেই সুযোগ এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার।
১৯৩১ থেকে ১৯৩৬ এই সময়ের মধ্যে তিনি অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। ১৯৩৯ সালে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ১৯৫২ সালে তিনি দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি হলেন এবং ১৯৬২ থেকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতির আসনে তাঁকে পেয়েছে দেশবাসী।