নিজস্ব প্রতিবেদন: ওদের কথা কেউ বেশিদিন মনে রাখে না। কিন্তু করোনার জেরে অসহায় ওরা। হয়তো জীবনটাই মোড় নিল খারাপের দিকে। হয়তো মৃত্যু হল কতগুলো প্রতিভাপন্ন মননের।
রমেশ, রাজু, বিল্টু (নাম পরিবর্তিত) ওদের আপনি দেখেছেন। আসলে প্রায়ই দেখেন, কিন্তু না দেখার ভান করে এড়িয়ে চলেন। কারণ ওদের দেখতে নেই। ওরা কেউ থাকে রেল লাইনের পাশের ঝুপড়িগুলোতে। কেউ আবার ওই যে রাস্তার পাশে ‘বস্তি’ বলেন, ওখানে।
আপনার ছেলে মেয়ে ইংরেজী মিডিয়াম স্কুলে যায়, ঠিকই, কিন্তু জানেন, ওরাও পড়াশোনা করে। আপনি যে বাংলা মিডীয়ামে পড়তেন, ওরাও সেখানেই পড়ে। এখন ওই স্কুল আপনার চোখে তস্য বাজে কিনা, তাই আপনার হয়তো চোখে পড়ে না এসব। কিন্তু ওরাও পড়ে, নাঃ থুড়ি, ওরাও পড়ত। লকডাউনের আগে ওরাও স্কুলে যেত।
তারপর লকডাউন। ওদের বাবা, যে কিনা ভ্যান চালাত বা শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে একটা দোকানে কাজ করত। তাঁর কাজটা চলে গেল। ওদের কয়েকজনের মায়েরা আবার কাজ করত আশে পাশের আপনার মতো বড় বাড়িগুলোতে। না করোনার ভয়ে আপনিও ছাড়িয়ে দিয়েছেন কিন্তু। বলেছেন আসতে হবে না।
অগ্যতা, সঞ্চয় নেই। কাজ নেই। এবার! ওই যে রমেশ, রাজু, বিল্টু (নাম পরিবর্তিত) রা এবার বেড়িয়ে পরেছে। কেউ লেবু বিক্রি করে, কেউ আবার বুট পালিশ করবে। নাহঃ রে রে করে তেড়ে আসবেন না। ঠিকই তো, ওরা তো খারাপ কিছু করছে না। নিজেরা কষ্ট করে ইনকাম করছে। তবে কিনা মুশকিলটা অন্য জায়গায়।
ওদের বয়স এখন ১০ কি ১২। এখন ওরা এমন কাঁচা টাকা পাচ্ছে হাতে। বড়লোক। আপনার মতো না হলেও, ওরা এখন বড়লোক। রোজ মায়ের থেকে অনেক বলে, বাবার বকুনি খেয়ে যেখানে জুটত টিফিনের দু’টাকা। আজ সেখানে ওরা প্রতিদিন মালিক হয় ৫০ টাকার, কেউ বা ১০০ টাকারও।
কী মনে হয় এরপরেও ওরা ফিরবে স্কুলে? আবার স্কুল খুললে আপনার কী মনে হয়?