নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীকে বাঁচালো ডাক্তার
গুজরাট: কথায় বলে, ভগবানকে চোখে দেখা যায় না, বিভিন্ন রূপ নিয়ে সে আমাদের জীবনে আসে। যেমন কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তাররা ভগবান স্বরূপ আমাদের জীবনে আসেন। তার জলজ্যান্ত প্রমান ডাক্তার সঙ্কেত মেহতা। তবে এটা ঠিক যে তাঁর মতো ডাক্তার এই সময় গোটা দেশে তো বটেই, সারা বিশ্বে বিরল।
বিশাল মাপের মনের অধিকারী এই ডাক্তার, তা না হলে কেউ নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে অন্যের জীবন বাঁচানোর উদ্যোগ নিতে পারেন! হ্যাঁ পারেন, ডাক্তার সঙ্কেত মেহতার মতো কেউ কেউ পারেন। আর তাঁরা এমনটা পারেন বলেই এই করোনা মহামারীতেও অবিশ্রান্ত লড়াই করে চলেছেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ বছরের ডাক্তার সঙ্কেত মেহতা, তাঁর জন্য প্রতি মিনিটে ৬ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন। কিন্তু একবারও নিজের জীবনের কথা না ভেবে নিজের অক্সিজেন মাস্ক খুলে লাগিয়ে দিয়েছিলেন ৭১ বছরের দীনেশ পুজারীর মুখে।
৯ অগস্ট গুজরাটের বাপস হাসপাতালে ভর্তি হন ডাক্তার সঙ্কেত মেহতা। তাঁর চিকিৎসা চলাকালীন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ৭১ বছর বয়সী দীনেশ পুজারীকে। তাঁর ‘ব্রেন ডেড’ রুখতে তৎক্ষনাৎ প্রয়োজন ছিল অক্সিজেনের। তখনই নিজের জীবনদায়ী ‘হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা’ খুলে দীনেশ পুজারীর মুখে লাগিয়ে দেন ডাক্তার সঙ্কেত।
এখন আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে আছেন ওই বৃদ্ধ। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। সঙ্কেত অবশ্য এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ১০ দিন ধরে করোনার সঙ্গে লড়ছেন তিনি। তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ যে এখন তিনি কথাও বলতে পারছেন না। শ্বাসকষ্ট ছিল প্রবল, তার মধ্যেও অন্যের জন্য নিজের জীবন বাজি রেখেছিলেন এই ভগবান স্বরূপ ডাক্তার।
এর আগে বাপস হাসপাতালেই কর্মরত ছিলেন ডাক্তার সঙ্কেত। পরে নিজের হাসপাতাল তৈরি করেন তিনি। কয়েকদিন আগেই জানা গোয়েছিল, করোনা লড়াইয়ে সারা দেশে প্রায় ২০০ চিকিৎসক প্রাণ হারিয়েছেন। কোভিড যুদ্ধে শহিদ হওয়া বহু চিকিৎসকদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
আবার অনেক সময় চিকিৎসকদের অমানবিক রূপও দেখেছি আমরা। তাতে অনেকেই অনেক সময় প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকদের মানবিকতা নিয়ে। তাঁদের সামনে জবাব ছুঁড়ে দিয়েছেন সঙ্কেত মেহতার মত ডাক্তাররা।