রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের রহস্য এবং জীববৈচিত্র একে অপরকে পাল্লা দেয়।
বরফে মোড়া হিমশীতল আগ্নেয়গিরির প্রান্তের একটি ছোট উপত্যকায় রহস্য ছড়িয়ে আছে পরতে পরতে। উপত্যকার এই অংশে পা রাখলেই নাকি মাথা ঝিমঝিম করে। ঘুম পায়। এমনকি, মাথাব্যথাও করে, উপত্যকায় জীবজন্তু প্রবেশ করে,কিন্তু আর বাইরে বার হতে পারে না। বেশির ভাগ প্রাণীই তৎক্ষণাৎ সেখানে মারা যায়। তীব্র ঠান্ডায় তাদের নিথর দেহগুলি অবিকৃত থাকে। বাইরে থেকে কোনও অসুখ এবং আঘাতের চিহ্নও দেখা যায় না।
এর কারন জানাতে গিয়ে রাশিয়ার ইনস্টিটিউট অব ভলক্যানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজি-র আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ ভ্লাদিমির লিয়োনোভের ধারণা, প্রাণীগুলির মৃত্যুরহস্যের কারণ হল আগ্নেয়গিরি। ১৯৭৫ সালে তিনই এই উপত্যকার অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, সালফার ডাই অক্সাইড, হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মতো গ্যাসের কারণেই জীবজন্তুরা মারা গিয়েছে। যে পরিমাণ গ্যাস এই উপদ্বীপে আছে, তার থেকে বেশি থাকলে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে, আবার কার্বন ডাই অক্সাইডের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা, মৃত্যু উপত্যকার বাতাসে এই মারণগ্যাসের উপস্থিতি এতটাই বেশি যে, জীবজন্তুরা শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে নিজেদের অজান্তেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ফলে তাদের দেহে কোনও আঘাতের চিহ্নই থাকে না। বলে মনে করেন তাঁরা।
কামচাটকা উপদ্বীপের জনসংখ্যা সাড়ে ৩ লাখেরও কম। এখানে বেশির ভাগ আগ্নেয়গিরিই অতি সক্রিয়। বরফে ঢাকা আগ্নোগিরির এই উপত্যকাকে ইউনেস্কো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ এর তকমা দেওয়া হয়েছে।
অনুমতি সাপেক্ষে এর বহু অংশেই যাওয়া যায়। উৎসাহী, গবেষক এবং পর্যটকরা যানও এই উপদ্বীপে। তবে উপত্যকার ‘ভ্যালি অব ডেথ’ অংশে সাধারণের প্রবেশ কার্যত নিষিদ্ধ।