নদিয়া: এবার করোনার থাবা পড়ল রানাঘাট ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতার উপর। জানা গিয়েছে, গত বুধবার থেকে জ্বর ছিল তাঁর। পরে জ্বর কমে গেলেও সন্দেহ হওয়ায় শনিবার তিনি রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিজের লালারস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন।
সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই সোমবার বিকেলে তিনি বেরিয়ে পড়েন রামনগর ১ পঞ্চায়েত এলাকায় পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দলীয় পদযাত্রায়। রাতে রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি করোনা পজিটিভ।
নেতার সংক্রমণের রিপোর্ট আসার পরেই মঙ্গলবার রানাঘাট ১ ব্লক অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে বিডিও সহ বেশ কিছু কর্মীকে। রামনগর ১ পঞ্চায়েত এলাকাকে কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সেই দিন কারা করা ওই নেতার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। স্যানিটাইজ় করা হয়েছে ব্লক অফিস, রামনগর ১ পঞ্চায়েত অফিস, স্থানীয় তৃণমূলের দফতর। ব্লক অফিসের ৫০ জনেরও বেশি কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাঁরা ওই নেতার সংস্পর্শে এসেছিলেন। এর মধ্যে বিডিও সহ ১২ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকিদেরও নেওয়া হবে। ১৪ দিনের জন্য রামনগর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে ১৪ দিনের জন্য।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রোগের প্রকোপ বেশি না থাকায় ওই তৃণমূল নেতাকে আপাতত বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করানো হচ্ছে। কিন্তু তাঁর নিজেরই যেখানে সন্দেহ ছিল, সেখানে কী করে ওই নেতা সর্বসমক্ষে এলেন, সেই প্রশ্ন প্রত্যাশিত ভাবেই উঠছে। সেদিন তৃণমূলের ওই কর্মসূচিতে বহু নেতাকর্মীর সঙ্গে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহও উপস্থিত ছিলেন। বিরোধীরা তো বটেই, দলেরও অনেকে এখন বলছেন, রিপোর্ট আসা পর্যন্ত ওই নেতার অপেক্ষা করা উচিত ছিল। তা না করে তিনি অনেককে বিপদের মুখে টেনে আনলেন।
মঙ্গলবার ওই নেতা অবশ্য দাবি করেন, “আমার জ্বর সেরে গিয়েছিল। আমি এর মধ্যে আর বেরোইনি। দলীয় কর্মসূচি থাকায় শুধু অল্প কয়েক মিনিটের জন্য গিয়েছিলাম।” বিধায়ক শঙ্কর সিংহও বলেন, “ওই নেতা সামান্য সময়ের জন্য এসেছিলেন। তখন তাঁর জ্বর ছিল না, রিপোর্টও আসেনি। আমরা সাবধানতা নিয়েছি। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলছি। পরীক্ষা করাব।”